“Boycott China” লেখা পোশাক উৎপাদনকারী রাষ্ট্র চীন নিজেই হওয়ার দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি “Boycott China লেখা পোশাক উৎপাদনকারী চীন নিজেই। ‘বয়কট চিন’ স্লোগান দেওয়া টি-শার্ট, টুপির এখন দারুণ চাহিদা ভারতে। চীনেই এই টি-শার্ট এবং টুপিগুলি তৈরি করা হচ্ছে। চীনের তৈরি টুপি টিশার্ট পরেই ভারতীয়রা চীনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, Boycott China লেখা টি-শার্ট, টুপির উৎপাদনকারী চীন নয় বরং এসব সামগ্রী ভারতেই তৈরী।

কী-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে, চীনের ইংরেজি দৈনিক Global Times এর টুইটার একাউন্টে ২০২০ সালের ২৩ জুন “The “Boycott China” items in #India were not made in #China, insiders said, analyzing that it might be Indian sellers who printed the slogans on the plain T-shirts and caps that were imported from China.” শীর্ষক শিরোনামে একটি টুইট বার্তা খুঁজে পাওয়া যায়। 

এই টুইট বার্তাটি থেকে জানা যায়, “Boycott China” লেখা সামগ্রীগুলো চীনের তৈরি নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় পণ্য ক্রেতারা চীন থেকে এই টিশার্ট ও টুপিগুলো আমদানি করে তার মধ্য এই স্লোগানগুলো ছাপিয়েছে। 

পরবর্তীতে এই গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ২২ জুন “‘Boycott China’ T-shirts and caps in India were not made in China: insiders” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে চীনের একটি সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, চীনা বিরোধী কোনো কন্টেন্ট ও গ্রাফিক্স রফতানি করা দেশটির আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ ও এই ধরণের পণ্য তৈরি ও রফতানি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। 

Screenshot from Global Times

এছাড়া The Fauxy নামের একটি ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের পহেলা জুন “China Manufactures #BoycottChina T-shirts and banners anticipating the Boycott China campaign” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

china
Screenshot The Fauxy website

তবে এই ওয়েবসাইটটিতে তাদের সম্পর্কে প্রদত্ত তথ্য থেকে জানা যায়, এটি একটি বিনোদনমূলক ওয়েবসাইট। এরা মূলত বিভিন্ন কল্পিত উৎসের মাধ্যমে চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে এমন ব্যাঙ্গাত্মক কন্টেন্ট তৈরি করে থাকে। এছাড়া ওয়েবসাইটটির টুইটারফেসবুক একাউন্টেও এই দাবির সত্যতা পাওয়া যায়। 

আরো পড়ুনঃ আপেল আকৃতির চকলেট তৈরির ভিডিওকে কৃত্তিম আপেল তৈরি দাবিতে প্রচার

মূলত, ২০২০ সালের জুনের মাঝামাঝিতে ভারতের লাদাখে বিরোধপূর্ণ চীন ভারত সীমান্তে দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষে ভারতের অন্তত বিশজন সৈন্য মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার মধ্যেই ভারত চীনের ৫৯টি মোবাইল এপ্লিকেশন নিষিদ্ধ করে। এছাড়া এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতে চীনা পণ্য বয়কট করার দাবিও উঠে। এমন প্রেক্ষিতে সেসময় ব্যাঙ্গাত্মক একটি লেখার উপর ভিত্তি করে ভারতে “Boycott China” লেখা পোশাক উৎপাদনকারী চীন নিজেই এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।

উল্লেখ্য, এই ঘটনা নিয়ে ভার‍তের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান দ্যা লজিক্যাল ইন্ডিয়ান ২০২০ সালের ৩০ জুন একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ” “Boycott China” লেখা পোশাক উৎপাদনকারী চীন নিজেই” শীর্ষক তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img