সম্প্রতি, “বঙ্গবন্ধু টানেল। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে স্থাপিত দক্ষিণ এশিয়ার সর্বপ্রথম টানেল। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।” শীর্ষক শিরোনামে উক্ত ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি বঙ্গবন্ধু টানেলের নয় বরং ছবিটি জার্মানির একটি টানেল এবং কর্ণফুলী নদীর একটি ছবির সমন্বয়ে এডিট করা হয়েছে।
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কাঠামোর তথ্য-উপাত্ত ও ছবি সমৃদ্ধ ওয়েবসাইট Structurae-এ ২০০৬ সালের ৮ জুনে ‘Engelberg Base Tunnel’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উক্ত টানেলের মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি, ট্র্যাভেল এজেন্সি ওয়েবসাইট Trip-এ ‘Karnaphuli River’ শীর্ষক অ্যালবামে আলোচিত ছবিতে ব্যবহৃত নদীর মূল এবং পূর্ণাঙ্গ ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
মূলত, আলোচিত ছবির টানেলটির নাম Engelberg Base Tunnel যা জার্মানির Baden-Württemberg শহরে অবস্থিত। টানেলটির নির্মাণ কাজ ১৯৯৫ সালে শুরু হয়ে ১৯৯৯ সালে সমাপ্ত হয়। জার্মানির এই টানেলের একটি ছবির সাথে কর্ণফুলী নদীর একটি ছবিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সূক্ষ্মভাবে এডিটের মাধ্যমে দুইটি ছবিকে একত্রিত করে বঙ্গবন্ধু টানেলের ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ চাঁদের উপরে আরবিতে আল্লাহ্ লিখা উক্ত ছবিটি এডিটেড
গুজবের সূত্রপাত
অনুসন্ধানে দেখা যায়, উক্ত ছবিটি Bashundhara Bitumen নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১৮ জানুয়ারিতে “কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার সর্বপ্রথম “বঙ্গবন্ধু টানেল”-এ ব্যবহৃত হচ্ছে একমাত্র বসুন্ধরা পলিমার মডিফাইড বিটুমিন…” শীর্ষক শিরোনামে ফেসবুকে সর্বপ্রথম প্রচারিত হয়। মূলত বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তুতকৃত বিটুমিন ব্যবহার হওয়ার তথ্যটি ফেসবুকে মার্কেটিং-এর উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত একটি ডিজিটাল ব্যানারে দুইটি ভিন্ন ছবি এডিট করে বসানো হয় যা পরবর্তীতে বিভ্রান্তিকরভাবে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে ৯.৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু টানেলটির নির্মাণকাজ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত সুড়ঙ্গ পথ। এই প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনার বাধা এবং আনুসঙ্গিক কারণে কাজ শেষ হতে আরো ৬ মাস বেশি লাগতে পারে বলে জানা যায়। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত অক্টোবর পর্যন্ত কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ প্রকল্পের ৭৬ শতাংশ কাজ শেষে হয়েছে।
সুতরাং, জার্মানির একটি টানেলের ছবির সাথে কর্ণফুলী নদীর ছবির সমন্বয়ে তৈরি একটি এডিটেড ছবি বঙ্গবন্ধু টানেল দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
[su_box title=”True or False” box_color=”#f30404″ radius=”0″]
- Claim Review: বঙ্গবন্ধু টানেল
- Claimed By: Facebook Posts
- Fact Check: False
[/su_box]
তথ্যসূত্র
- Structurae: https://structurae.net/en/structures/engelberg-base-tunnel
- Trip.com: https://www.trip.com/travel-guide/chittagong-14720/tourist-attractions-photo/
- Bashundhara Bitumen: https://www.facebook.com/BashundharaBitumen/posts/462005698814866
- The Daily Star: https://www.thedailystar.net/bangla/%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%AB%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%80-%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A3-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A6-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%93-%E0%A7%AC-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%AC%E0%A7%83%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A6%E0%A6%A8-295536
- Samakal: https://samakal.com/todays-print-edition/tp-last-page/article/2201142664/%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%81-%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%E0%A6%AB%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%80-%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B2-%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4-%E0%A6%8F-%E0%A6%AC%E0%A6%9B%E0%A6%B0%E0%A6%87