সম্প্রতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল পেজ থেকে দৈনিক ৪২০০টি আলাদা আলাদা বুস্টিং বিজ্ঞাপন চলছে দাবিতে একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। পোস্টটিতে আরও দাবি করা হয়, প্রতিটি বিজ্ঞাপনের পেছনে যদি ১০ ডলার খরচ করা হয় তাহলেও দৈনিক এর পেছনে ৪২ হাজার ডলার বা প্রায় ৫৫ লাখ টাকা খরচ করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের পেজ থেকে বর্তমানে দৈনিক ৪২০০টি আলাদা আলাদা বুস্টিং বিজ্ঞাপন চালানোর দাবিটি সঠিক নয়। বরং, পেজটি থেকে সর্বশেষ বিজ্ঞাপন চালানো হয়েছিল ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত। বর্তমানে পেজ থেকে কোনো বিজ্ঞাপন চালানো হচ্ছে না।
দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল পেজটির পেজ ট্রান্সপারেন্সি সেকশন পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার দেখেছে, পেজটি থেকে ‘সামাজিক ইস্যু, নির্বাচন বা রাজনীতি’ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন চালানো হয়েছে। এছাড়াও জানা যায়, বর্তমানে আওয়ামী লীগের পেজটি থেকে কোনো বিজ্ঞাপন চালানো হচ্ছে না।

পরবর্তীতে Go to Ad Library অপশনে ক্লিক করে মেটা অ্যাড লাইব্রেরিতে প্রবেশ করে দেখা যায়, বর্তমানে পেজটিতে কোনো ‘সক্রিয় বিজ্ঞাপন’ নেই। তবে সক্রিয় বিজ্ঞাপন ফিল্টারটি বাদ দিলে ‘নিষ্ক্রিয় বিজ্ঞাপন’ এর ক্ষেত্রে প্রায় ৪১০০টি বিজ্ঞাপন দেখতে পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে সর্বশেষ বিজ্ঞাপনটি চালানো হয় ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত।

মেটার অ্যাড লাইব্রেরি সম্পর্কিত বিবরণী পর্যালোচনা করে জানা যায়, মেটা সামাজিক ইস্যু, নির্বাচন বা রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত সক্রিয় অথবা নিষ্ক্রিয় বিজ্ঞাপন সাত বছরের জন্য সংরক্ষণ করে। সংরক্ষিত বিজ্ঞাপনের মূল কন্টেন্ট, অর্থায়নকারী ব্যক্তি বা সংস্থার নাম, বিজ্ঞাপনটি কতবার দেখানো হয়েছে, কত দিন পর্যন্ত চলেছে, এর পেছনে কত অর্থ খরচ করা হয়েছে, কাদের লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপনটি প্রচারিত হয়েছে, এসব তথ্যও মেটা অ্যাড লাইব্রেরিতে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পেজ থেকে চালানো সব বিজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পেজটি থেকে মোট ৪১০৯টি বিজ্ঞাপন চালানো হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম বিজ্ঞাপনটি ২০১৮ সালের ১৬ মে।
সুতরাং, বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ থেকে দৈনিক ৪২০০টি আলাদা আলাদা বুস্টিং বিজ্ঞাপন চলছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Bangladesh Awami League Facebook Page
- Rumor Scanner’s Analysis