বিগত কয়েক বছর ধরে, মানুষের পায়ের মতো মুলা দাবিতে একটি ছবি ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে।

উক্ত দাবিতে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে,এবং এখানে। উক্ত পোস্টগুলোর আর্কাইভ দেখুন, এখানে, এখানে, এখানে, এবং এখানে।
একই দাবিতে বিগত বছরগুলোর কিছু পোস্ট দেখুন –
২০২০ – এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
২০১৮ – এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
২০১৭ – এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
২০১৬ – এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মানুষের পায়ের মতো দেখতে মুলাগুলো আসল মুলা নয় বরং কেনঝি সুয়েটসুগু নামের একজন জাপানি শিল্পীর তৈরি একটি আর্টওয়ার্ক বা শিল্পকর্ম এটি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফেসবুকে গত ১৭ মার্চ Japan moments নামক একটি পেজ থেকে ‘Strange radish in Japan’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি পোস্টে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায় উক্ত ছবিটি মূলত কেনঝি সুয়েটসুগু (Kenji Suetsugu) নামক একজন জাপানি আর্টিস্টের তৈরি। তাছাড়া সেই পোস্টের ক্যাপশনে মূল আর্টিস্টের ইনস্টাগ্রাম আইডির লিংক ম্যানশন করা ছিল।

পরবর্তীতে, কেনঝি সুয়েটসুগু এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

কেনঝি সুয়েটসুগু এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যায়, জাপানের ফুকুওকাতে পরাবাস্তব ভাস্কর্য, স্পেশাল মেকআপ ইফেক্টের কাজ করেন তিনি।
আইডির বায়োতে https://tsukurimono.com/ নামক একটি সাইট উল্লেখ রয়েছে।
পরবর্তীতে উক্ত সাইটেও আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। সাইটে ছবিটির ক্যাপশনে ছবিটিকে Daikonashi (2005) নামে অভিহিত করে এটি তৈরি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এটির মূল অংশ ইউরেথেন এবং পাতার অংশটি আসল মুলার পাতা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

Screenshot from Tsukurimono
পরবর্তীতে সাইটটির About সেকশন থেকে জানা যায়, এই সাইটটি মূলত কেনঝি সুয়েটসুগু এরই।

এই ছবির বিষয়ে জানতে পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে কেনঝি সুয়েটসুগু এর সাথে
যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “শিল্পকর্মটি জাপানি অভিব্যক্তি ‘ডাইকোন-আশি’ এর উপর ভিত্তি করে ২০০৫ সালে আমি তৈরি করেছিলাম। ‘ডাইকোনাশি’ নারীর মোটা পা অর্থে ব্যবহৃত হয়। আমি ভেবেছিলাম আসল পায়ের মতো একটি মূলা তৈরি করা আকর্ষণীয় হবে, তাই এটি তৈরি করেছিলাম।”
মূলত, জাপানি এক্সপ্রেশন “daikon-ashi’ এর উপর ভিত্তি করে ২০০৫ সালে জাপানি শিল্পী কেনঝি সুয়েটসুগু মুলা দিয়ে মানুষের পা সদৃশ একটি আর্টওয়ার্ক তৈরি করেন। তবে এই আর্টওয়ার্কটিকেই আসল মুলা দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি একই ছবিকে মুলা দিয়ে তৈরি শ্রীকৃষ্ণের পায়ের প্রতিকৃতি দাবি করে ফেসবুকে প্রচার করা হলে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, জাপানি এক শিল্পীর তৈরি শিল্পকর্মকে বাস্তব মুলা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Japan moments: Facebook Post
- Tsukurimono: Daikonashi (2005)
- Statement form Kenji Suetsugu