সম্প্রতি “গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার হামিন্দপুর (কামারপাড়া) এলাকায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে তৈরি করা প্রতিমায় দু’বৃ’ত্তরা আ’গু’ন দিয়েছে” শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ছবিটি দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে তৈরি করা প্রতিমায় দুর্বৃত্তের অগ্নিসংযোগের ঘটনা দাবিতে প্রচারিত এই ছবিটি আসল নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ছবি।
ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে একাধিক এআই-জনিত অসংগতি লক্ষ্য করা যায়। প্রথমত, মূর্তির চারপাশে আগুনের শিখাগুলো অস্বাভাবিকভাবে সমানভাবে ছড়িয়ে রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আগুনের আলো মানুষের শরীরে স্বাভাবিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি। তৃতীয়ত, উজ্জ্বল আলো থাকা সত্ত্বেও মানুষের ছায়া ঠিকভাবে পড়েনি। এছাড়া, লাঠি ধরার ভঙ্গিতেও অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়।

পরবর্তীতে, বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে ছবিটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী ওয়েবসাইট হাইভ মডারেশনে পরীক্ষা করা হয়। ওয়েবসাইটটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৮ শতাংশ।

পাশাপাশি, ছবিটি ভিন্ন আরেক এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী ওয়েবসাইট সাইটইঞ্জিনে পরীক্ষা করা হয়। ওয়েবসাইটটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ০২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত একটার দিকে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে তৈরি করা একটি প্রতিমায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশসহ প্রতিমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পুড়ে যায়।

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরিকৃত ছবিকে গাইবান্ধায় দুর্গাপূজার প্রতিমায় দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগের আসল ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis
- Hive Moderation
- Sightengine
- Prothom Alo: গাইবান্ধায় রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তদের আগুনে দুর্গাপূজার কয়েকটি প্রতিমা ছাই