গত ১০ মাসে দেশ থেকে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১০ মাসে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচারের দাবিটি সত্য নয়। বরং, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক অনুষ্ঠানে বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে মোট ১৮-২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরের সাড়ে ১০ মাসে ২৭ হাজারেরও বেশি সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্ট (এসটিআর) পাওয়া গেছে। তবে কতিপয় গণমাধ্যমের বিভ্রান্তিকর শিরোনামের কারণে এই দুটি আলাদা তথ্য একত্র হয়ে সামাজিক মাধ্যমে “গত ১০ মাসে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার” দাবি হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে দাবিটির সূত্রপাত হিসেবে জাতীয় দুই দৈনিক কালের কণ্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের “১০ মাসে ২৭ হাজার সন্দেহজনক লেনদেন, ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার” শিরোনামের দুটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে প্রচারিত হতে দেখা যায়। উভয় গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজ (১, ২) ও ওয়েবসাইটে (১, ২) একই শিরোনামের প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে কালের কণ্ঠ শিরোনাম সংশোধন করলেও বাংলাদেশ প্রতিদিনে এখনও আগের শিরোনামই রয়ে গেছে।
গণমাধ্যম দুইটির ২৮ মে প্রকাশিত বিস্তারিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের সাড়ে ১০ মাসে (২০২৪ সালের জুলাই থেকে ১৫ মে পর্যন্ত) ২৭ হাজার ১৩০টি সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্ট (এসটিআর) পাওয়া গেছে। ২৭ মে বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশ থেকে ১৮-২০ বিলিয়ন বা এক হাজার ৮০০ কোটি থেকে দুই হাজার কোটি ডলার পাচার হয়েছে।
একই তথ্য অন্যান্য মূলধারার গণমাধ্যমেও (১, ২) প্রকাশিত হয়েছে।
অর্থাৎ, ১৮-২০ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ গত ১০ মাসের নয়, বরং আওয়ামী লীগের শাসনামলের। প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে এটি সঠিকভাবে উল্লেখ করা হলেও বিভ্রান্তিকর শিরোনামের কারণে সামাজিক মাধ্যমে অনেকে এটিকে গত ১০ মাসের পাচার হওয়া অর্থ হিসেবে প্রচার করছেন।
সুতরাং, “গত ১০ মাসে দেশ থেকে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে” শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Kalerkantho: ১০ মাসে ২৭ হাজার সন্দেহজনক লেনদেন
- Bangladesh Pratidin: ১০ মাসে ২৭ হাজার সন্দেহজনক লেনদেন, পাচার ২০ বিলিয়ন ডলার
- Kalbela: সন্দেহজনক লেনদেন ১০ মাসে ২৭ হাজার
- Samakal: সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্টিং বেড়েছে ৫৬ শতাংশ