Home Blog Page 110

তুলসী গ্যাবার্ডের ভারত আগমনে চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জন্য সীমান্তে আন্দোলন দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক (ডিএনআই) তুলসী গ্যাবার্ড গত ১৬ মার্চ ভারতে আসেন। ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলে সফরের অংশ হিসেবে অন্যান্য দেশের পাশাপাশি তুলসী ভারতের মাটিতে পা রাখলেন। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘তুলসী গ্যাবার্ড ভারতে আসার পর, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর জন্য, ভারতের সাধারণ জনগণ বাংলাদেশ সীমান্তে আন্দোলন করছে এবং হিন্দু জনগণ যদি নিরাপত্তায় না থাকতে পারে তাহলে বাংলাদেশে আবার আগুন জ্বলবে একাত্তরের মত আবার আমরা ওদের পাশে থাকবো।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডের ভারতে আসার পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জন্য ভারতের সাধারণ জনগণ বাংলাদেশ সীমান্তে আন্দোলন করছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২৪ সালের একটি ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির পর্দার একপাশে ‘পেট্রাপোল সীমান্ত’ ও অন্যপাশে  ‘Rashtriya TV’ লেখা একটি একটি লোগো রয়েছে। 

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্রে ভারতীয় গণমাধ্যম Rashtriya TV Bangla এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ০২ ডিসেম্বর ‘পেট্রাপোলে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে অবরোধ, আলু পেঁয়াজ বন্ধ করে দেবে ভারত!’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, সে সময় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তি ও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তার দাবিতে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে পেট্রাপোলে অবরোধ করেছে ভারতীয় জানতা পার্টির (বিজেপি) নেতা-কর্মীরা। তবে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় দুই দেশের সীমান্ত পরিষেবা চালু ছিল।

পরবর্তীতে, একই বিষয়ে বাংলাদেশের মূলধারা গণমাধ্যম আজকের পত্রিকার ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ০২ ডিসেম্বর ‘চিন্ময় দাসের মুক্তির দাবিতে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে বিজেপির বিক্ষোভ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়৷ 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি ২০২৪ সালের, সাম্প্রতিক সময়ের নয়৷ 

সুতরাং, তুলসী গ্যাবার্ড ভারতে আসার পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জন্য ভারতের সাধারণ জনগণ বাংলাদেশ সীমান্তে আন্দোনের সাম্প্রতিক ভিডিও দাবিতে ২০২৪ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

তুলসী গ্যাবার্ডের সাথে শেখ হাসিনার বৈঠক দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত

0

২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে অবস্থান করছেন। এদিকে, ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলে সফরের অংশ হিসেবে অন্যান্য দেশের পাশাপাশি গত ১৬ মার্চ ভারতে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক (ডিএনআই) তুলসী গ্যাবার্ড। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান “তুলসী গ্যাবার্ড” আমাদের মমতাময়ী অভিভাবক বাংলাদেশের বৈধ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক ক্যাপশনে তুলসী গ্যাবার্ড ও শেখ হাসিনার একটি ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের সাথে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক দাবিতে প্রচারিত ছবিটি আসল নয়৷ মূলত, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ভিন্ন দুইটি ছবি কর্তন-প্রতিস্থাপন করে উক্ত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১৭ মার্চ প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের দ্বিতীয় ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির আংশিক মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। 

Photo: Narendra Modi X Account

একই বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম The New Indian Express এর ওয়েবসাইটে গত ১৭ মার্চ ‘PM Modi meets Tulsi Gabbard; advancing strategic ties discussed’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই ছবি ব্যবহার করা হয়েছে৷ 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি সেদিন ভারত সফরকালে তুলসী গ্যাবার্ড ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে ধারণ করা হয়। 

উক্ত ছবি ও আলোচিত ছবি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ছবি দুটিতে দুই দেশের পতাকা, আসবাবপত্র ও তুলসী গ্যাবার্ডের অবস্থানের মধ্যে মিল থাকলেও প্রচারিত ছবিতে নরেন্দ্র মোদির স্থলে শেখ হাসিনা রয়েছেন।

Screenshot: Ittefaq Website

পরবর্তীতে শেখ হাসিনার ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০৯ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৩ সমঝোতা স্মারক সই’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত ছবিতে শেখ হাসিনার অবস্থানের সাথে প্রচারিত ছবিতে শেখ হাসিনার অবস্থানের মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

উপরোক্ত তথ্যাবলী থেকে বলা যায়, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ২০২৩ সালে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের ছবি থেকে শেখ হাসিনার অংশটি কর্তন করে তা গত ১৭ মার্চ তুলসী গ্যাবার্ড ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে ধারণকৃত ছবিতে নরেন্দ্র মোদির স্থলে প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

সুতরাং, তুলসী গ্যাবার্ডের সাথে শেখ হাসিনার বৈঠকের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত৷ 

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূসকে অপসারণ করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত স্যাটায়ার পোস্ট ছড়ালো আসল দাবিতে

0

গত ১৩ মার্চ চারদিনের সফরে ঢাকায় আসেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস । বাংলাদেশ সফরকালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে একাধিক বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের গণতন্ত্রের উত্তরণ, রোহিঙ্গা ইস্যু ও মানবাধিকার বিষয় গুরুত্ব পায়৷ এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘আলহামদুলিল্লাহ ইউনুস সাহেবের সমস্ত কৌশল লন্ডভন্ড শেখের বেটির জয় আর জয় দি ডেইলি স্টার নিউজ।’ ক্যাপশনে ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ইউনুসকে অপসারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিরে আসার আগ পর্যন্ত জাতিসংঘের শাসন জারি’ শীর্ষক শিরোনামে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ছবিযুক্ত ফটোকার্ড সম্বলিত একটি দাবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷ 

ড. ইউনূসকে অপসারণ

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ইউনুসকে অপসারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিরে আসার আগ পর্যন্ত জাতিসংঘের শাসন জারি’ শীর্ষক দাবিতে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার কোনো ফটোকার্ড কিংবা সংবাদ প্রকাশ করেনি।৷ মূলত, দ্য ডেইলি স্টারকে ব্যঙ্গ করে তৈরি দ্য দিল্লি স্টার নামক একটি স্যাটায়ার ফেসবুক পেজের পোস্টকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের নামে ব্যবহৃত ফন্টের সঙ্গে মিল রেখে লেখা ‘The Delhi Star’। 

উক্ত তথ্যের সূত্রে এই নামে একটি ফেসবুক পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চালু হওয়া পেজটিতে প্রকাশিত বিভিন্ন কনটেন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি একটি স্যাটায়ার পেজ। পেজটি থেকে গত ১৪ মার্চ আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রকাশ করা হয়। 

পেজটির নামের সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের নামের ফন্ট মিল থাকায় তাদের স্যাটায়ার ফটোকার্ডটিকে পত্রিকাটির নামে প্রচার করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হয়৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

তাছাড়া, দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড, সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ 

সুতরাং, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে অপসারণ এবং শেখ হাসিনা ফিরে আসার আগ পর্যন্ত দেশে জাতিসংঘের শাসন জারি দাবিতে ‘দ্য দিল্লি স্টার’ নামক ফেসবুক পেজের পোস্টটি স্যাটায়ার বা ব্যঙ্গাত্মক।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Analysis 

নেত্রকোনায় হিন্দু বাড়িতে জামায়াত-শিবির আগুন দিয়েছে দাবিতে খাগড়াছড়িতে মুসলিম বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, নেত্রকোনা একটি হিন্দু বাড়িতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা আগুন দিয়েছে দাবিতে একটি আগুনের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

নেত্রকোনায় হিন্দু

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।       

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নেত্রকোনায় হিন্দু বাড়িতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের আগুন দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালে খাগড়ছড়ির একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়াও উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয় বরং মুসলিম।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে M F Rabby নামের একটি ফেসবুক আইডিতে ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টে আলোচিত ভিডিওর পাশাপাশি ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার আরও একটি ভিডিও এবং ছবিও দেখতে পাওয়া যায়। পোস্টটির শিরোনামে পোস্টকারী ব্যক্তি Mohammad M S Roni নামের আরেকজন ব্যক্তিকে মেনশন করে তার জন্যে কিছু করতে না পারার কারণে নিজের অপারগতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও উক্ত পোস্টটিতে লক্ষ্য করা যায়, পোস্টকারী ব্যক্তি ঘটনাটির লোকেশনের স্থানে খাগড়াছড়ির গুইমারা এলাকার নাম উল্লেখ করেন। 

পরবর্তীতে উক্ত পোস্টের সূত্র ধরে Mohammad M S Roni নামের ওই ব্যক্তির প্রোফাইল পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ১৭ মার্চ তার প্রোফাইলেও আলোচিত ভিডিওটি রিলস আকারে প্রচারিত হতে দেখা যায়। 

Screenshot: Facebook

পোস্টটির শিরোনামে তিনি জানান উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর ঘটে। এছাড়াও পোস্টটি থেকে জানা যায়, এ ঘটনায় পুড়ে যাওয়া বাড়িটি তার-ই। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে সেসময় তার প্রোফাইলে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যালোচনা করে গতবছরের ২৪ অক্টোবর করা একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

পোস্টটিতে তিনি জানান, দূর্ঘটনাবশত গতবছরের ২৩ অক্টোবর তাদের বাড়িতে আগুন লাগে। যা মুহুর্তের মধ্যেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রূপ লাভ করে। এতে তাদের পুরো বাড়িঘর পুড়ে শেষ হয়ে যায়। এছাড়াও উক্ত পোস্টটিতেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার অন্যান্য ছবি ও ভিডিওর পাশাপাশি আলোচিত ভিডিওটিও দেখতে পাওয়া যায়। তবে পোস্টটির কোথাও উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সাথে জামায়াতে ইসলামী বা ছাত্রশিবিরের যুক্ত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি। পাশাপাশি তার পোস্ট এবং তার প্রোফাইল পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায় ভুক্তভোগী একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী।

সুতরাং, খাগড়াছড়ির মুসলিম বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পুরোনো ভিডিওকে নেত্রকোনায় হিন্দু বাড়িতে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের সাম্প্রতিক সময়ে আগুন দেওয়ার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • M F Rabby Facebook Post
  • Mohammad M S Roni Facebook Post
  • Mohammad M S Roni Facebook Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

ঢাবিতে হিযবুত তাহ্‌রীরের পুরোনো শোডাউনের দৃশ্য সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্প্রতি একটি শোডাউন বা মিছিলের দৃশ্য প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ জ’ঙ্গি সংগঠন হি’জবুত তাহরীর মিছিল। জ’ঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে রূপ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। -১৮ মার্চ ২৫ | ঢাবি।” 

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে যে প্রচারিত দৃশ্যটি গত ১৮ মার্চের।

এছাড়াও ক্যাপশনে “নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর  ঢাবিতে মিছিল করছে অথচ জঙ্গি ইউনুস প্রশাসন নিরব। এসব লোকজন  খেলাফত চায়।এঁরা কার খেলাফত চায়, কিসের খেলাফত? খেলাফত মানে কি?এদের হাতে আইএসের পতাকা কেন?” লিখে সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করা ব্যতীত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন অবস্থায় সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত মিছিল হয়েছে দাবিতেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

হিযবুত তাহ্‌রীরে

এরূপ দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়াও, গত ১৯ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ট্যামি ব্রুসকে সাংবাদিক গোলাম দস্তগীর আলোচিত ভিডিওটি দেখিয়ে দাবি করেন, ভিডিওটি গত ১৮ মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহৎ খেলাফত পন্থী সমাবেশের দৃশ্যের।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল বা শোডাউনের সাম্প্রতিক সময়ের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত দৃশ্যটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পূর্বে গত ০৬ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিজবুত তাহ্‌রীরের মিছিলের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘Md. Abdul Karim’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০৬ আগস্টে “কার্জন হল থেকে হিজবুত তাহেরির মিছিল | এই মুহুর্তে দরকার, খেলাফত সরকার। | আমার স্বাধীনতা যেন বৃথা না যায়” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

তাছাড়া, একই ক্যাপশনে উক্ত একই ভিডিওটি গত ০৭ আগস্টে ‘Zarifnews Tarique’ নামের আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও পোস্ট হতে দেখা যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

এদিকে, গত ০৮ আগস্টে রাত সোয়া ৯টার দিকে বঙ্গভবনে দরবার হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করে। তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পূর্বের।

উল্লেখ্য যে, প্রচারিত ভিডিওটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পূর্বের এবং পুরোনো হলেও সাম্প্রতিক সময়ে গত ০৭ মার্চে জুমার নামাজ শেষ হওয়ার পরেই হিযবুত তাহ্‌রীরের ব্যানার নিয়ে একটি মিছিল বের হয়। পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মিছিলটি পল্টন মোড় পার হয়ে বিজয়নগর মোড়ের দিকে যায়। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

সুতরাং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার আগে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের পুরোনো মিছিল বা শোডাউনের একটি দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন অবস্থায় হওয়া হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিলের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

২০ মার্চ, ২০২৫ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ট্যামি ব্রুসকে একজন সাংবাদিক  আলোচিত ভিডিওটি দেখিয়ে একইরকম দাবি করার বিষয়টি আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে তার বক্তব্য প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে ড. ইউনূসের মন্তব্য দাবিতে আমার দেশের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি,  “আমরা তো কখনো বলিনি ভারত আমাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোন কাজ করেছে। এটা সত্যি, আমাদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। এটা স্বাভাবিক। নরেন্দ্র মোদি, তিনি তো আমার ভাইয়ের মতো। তার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক আমার। – ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস, প্রধান উপদেষ্টা” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম আমার দেশের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

নরেন্দ্র মোদি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নরেন্দ্র মোদি এবং ভারত প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে আমার দেশ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আমার দেশের ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে আমার দেশের লোগো রয়েছে তবে এটি প্রকাশের তারিখ উল্লেখ নেই।

আমার দেশের লোগোর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবিসম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, আমার দেশের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটির শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আমার দেশের প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, আমার দেশ এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, নরেন্দ্র মোদি এবং ভারত প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জড়িয়ে আমার দেশের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

বঙ্গবন্ধুর ১০৫ তম জন্মবার্ষিকীর নয়, বঙ্গবন্ধুর প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের ভিডিওটি তার জন্মশতবার্ষিকীর

সম্প্রতি ‘বঙ্গবন্ধুর ১০৫ তম জন্মদিনে # রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে #কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন #ও বিশ্ব মিডিয়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন #####’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গত ১৭ ই মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫ তম জন্মবার্ষিকীতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের নয়, বরং এটি ২০২১ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ দেয়া ভিডিও বার্তার ঘটনা।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির ডান পাশে থাকা লোগোর সূত্র ধরে অনলাইন  গণমাধ্যম নিউজ বাংলা ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১৯ মার্চ ‘বঙ্গবন্ধু অনন্য বিশ্বনেতা: রাশিয়া | Mujib100 Celebration’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ১৪  সেকেন্ড অংশ থেকে ১ মিনিট ১৬ সেকেন্ড অংশের হুবুহু মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

এছাড়া, একাত্তর টিভি এর ইউটিউব চ্যানেলেও একই ঘটনার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে, একই ঘটনায়  মূলধারার গণমাধ্যম ইত্তেফাকে ২০২১ সালের ১৯ মার্চ ‘বঙ্গবন্ধুকে যোদ্ধা হিসেবে স্মরণ করে রাশিয়া: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন যোদ্ধা এবং রাশিয়া তাকে সেভাবেই স্মরণ করে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উৎসবে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাশিয়ার একজন প্রকৃত বন্ধু ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার দুই মাসের মধ্যে ১৯৭২ সালের মার্চে বঙ্গবন্ধু মস্কো সফর করেন। ওই সময়ে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়।

অর্থাৎ, শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের এই ভিডিওটি ২০২১ সালের মার্চ মাসের।

উল্লেখ্য, আলোচিত দাবির পোস্টগুলোতে এবছর শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫ তম জন্মদিনের কথা বলা হলেও এবছর শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫ তম জন্মদিন নয় বরং ১০৫ তম জন্মবার্ষিকী এবং ১০৬ তম জন্মদিন পালিত হয়েছে।

সুতরাং, শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ দেয়া ভিডিও বার্তাকে বঙ্গবন্ধুর ১০৫ তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

কারাগার থেকে সাবেক বিচারপতি মানিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের তথ্যটি ভুয়া 

0

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ০৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২৩ আগস্ট সিলেটের কানাইঘাটে একটি অবৈধ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) হাতে আটক হন সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। ২৪ আগস্ট ভোরে তাঁকে কানাইঘাট পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর পর থেকে কারাগারে বন্দি আছেন তিনি। সম্প্রতি ‘ব্রেকিং নিউজ: কারাগারে সাবেক বিচারপতি মানিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন সূত্রে বেশকিছু পোস্ট সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে বিচারপতি মানিকের ছবি ব্যবহার করে লেখা হয়েছে, “**ঢাকা, ১৭ মার্চ ২০২৫** – বাংলাদেশের সাবেক বিচারপতি এ.বি.এম. খায়রুল হক মানিক আর নেই। আজ সন্ধ্যায় কারাগারে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।** তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।”

উক্ত প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ) । 

উক্ত দাবিতে ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, কারাগারে বিচারপতি মানিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের খবরটির কোনো সত্যতা নেই বরং, কোনো প্রকার তথ্য প্রমাণ ছাড়াই উক্ত দাবিটি প্রতিবেদন ও ফেসবুক পোস্ট আকারে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ব্লগপোস্টের লিংক সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে sadhinnews247 নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। সাইটে শাহবাগে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন হাসনাত আবদুল্লাহ শীর্ষক কথিত দাবির বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে গত ১৭ মার্চ। 

কথিত এই সংবাদে দাবি করা হয়, ‘বাংলাদেশের সাবেক বিচারপতি এ.বি.এম. খায়রুল হক মানিক আর নেই। আজ সন্ধ্যায় কারাগারে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।  কারা কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে কারাগারের এক ওয়ার্ডেন রুটিন চেকিংয়ের সময় তাঁর দেহ ঝুলতে দেখেন। পরে কর্তৃপক্ষ দ্রুত তাকে উদ্ধার করে, তবে তখনই তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে করা হলেও, অনেকেই তাঁর মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন। তদন্তের জন্য উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

প্রতিবেদনটি বিশ্লেষন করে দেখা যায়, এতে ব্যক্তির নাম হিসেবে এ.বি.এম. খায়রুল হক মানিক লিখা হয়েছে, কিন্তু সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। 

গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণত, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এন শামসুদ্দিন চৌধুরীর মতো আলোচিত ব্যক্তিত্ব মৃত্যুবরণ করলে তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতো। 

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কারাগারে বিচারপতি মানিকের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে কারা কতৃপক্ষ নিশ্চিত করে এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সুস্থ আছেন। কারা কতৃপক্ষের বরাতে প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে । পরবর্তীতে তার অসুস্থতা নিয়ে গণমাধ্যমে আর কোন সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। 

উল্লেখ্য সেসসময় তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

অর্থাৎ, তার বিষয়ে সর্বশেষ প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী তিনি এখন কারাগারে সুস্থ আছেন।

সুতরাং, কারাগার থেকে বিচারপতি মানিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র 

খিলক্ষেতে ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনির শিকার কিশোরের মৃত্যু ঘটেনি

সম্প্রতি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে এক কিশোরকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার সময় তাকে উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন আমাদের সময়.কম, এখন টিভি, বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, খিলক্ষেত এলাকায় ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনির শিকার কিশোরের মৃত্যুর দাবিটি সত্য নয়। কিশোরটি বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে আজ ১৯ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় ছয় বছর বয়সী এক মেয়েশিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক কিশোরকে বিক্ষুব্ধ জনতা গণপিটুনি দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ বলেছে, কিশোরের বয়স আনুমানিক ১৬ বছর। তবে পরিবারের দাবি, তার বয়স ১১ বছর এবং সে স্যানিটারি সামগ্রী বিক্রির একটি দোকানে কাজ করে। অপরদিকে, ওই মেয়েশিশুকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিডিনিউজ২৪-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার ছয় বছরের শিশুটির শরীরে ‘ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে’ বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রকিবুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, গণপিটুনির পর কিশোরকে মৃত ভেবে ফেলে গেলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তিনি জানান, গণপিটুনিতে কিশোর গুরুতর আহত হলেও এখন পর্যন্ত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার শিশির কুমার ঘোষও রিউমর স্ক্যানারকে একই তথ্য নিশ্চিত করেন।

সুতরাং, খিলক্ষেত এলাকায় ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনির শিকার কিশোরের মৃত্যুর দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জামাত-শিবির কর্মীরা ধর্ষণ শেষে তরুণীকে চলন্ত ট্রেনের নিচে রেখে গেছে দাবিতে ভারতের সাজানো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, জামাত-শিবির কর্মীরা ধর্ষণের পর তরুণীকে চলন্ত ট্রেনের নিচে ফেলে দিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে রেললাইনের ওপর নারীর পোশাক পরা, মাথাবিচ্ছিন্ন একটি মরদেহ সাদৃশ বস্তু পড়ে থাকতে দেখা যায়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ধর্ষণের পর রেললাইনে ফেলে হত্যার দৃশ্য নয়। এটি ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি সাজানো ভিডিও। ভিডিওতে রেললাইনের ওপর পড়ে থাকা নারী মরদেহের মতো দেখতে বস্তুটি আসলে একটি পুতুল।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘JS HAUNTED VLOGS’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৯ মার্চ প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভালো মানের ওই ভিডিও বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া যায়, রেললাইনে পড়ে থাকা বস্তুটি মানবদেহ নয়, একটি পুতুল।

Comparison: Rumor Scanner. 

চ্যানেলটির অ্যাবাউট সেকশন থেকে জানা যায়, এটি একটি ভারতীয় বিনোদনমূলক ইউটিউব চ্যানেল। চ্যানেলটি ঘুরে দেখা যায়, সেখানে ভৌতিক ও কাল্পনিক ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে প্রচার করা হয়।

এছাড়া, চ্যানেলটি ঘুরে রেললাইনে পুতুল ফেলে তৈরি আরও একাধিক ভিডিও (,,) পাওয়া যায়। সেগুলো দেখেও নিশ্চিত হওয়া যায়, ভাইরাল ভিডিওতে রেললাইনের ওপর পড়ে থাকা বস্তুটি একটি পুতুল। একই চ্যানেলে পুতুল ব্যবহার করে নির্মিত আরও নানা ধরনের কনটেন্ট দেখা যায় (,)।

সুতরাং, ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত সাজানো ভিডিওকে জামাত-শিবির কর্মীদের দ্বারা ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র