সম্প্রতি, নেত্রকোনা একটি হিন্দু বাড়িতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা আগুন দিয়েছে দাবিতে একটি আগুনের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নেত্রকোনায় হিন্দু বাড়িতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের আগুন দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালে খাগড়ছড়ির একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়াও উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয় বরং মুসলিম।
দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে M F Rabby নামের একটি ফেসবুক আইডিতে ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টে আলোচিত ভিডিওর পাশাপাশি ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার আরও একটি ভিডিও এবং ছবিও দেখতে পাওয়া যায়। পোস্টটির শিরোনামে পোস্টকারী ব্যক্তি Mohammad M S Roni নামের আরেকজন ব্যক্তিকে মেনশন করে তার জন্যে কিছু করতে না পারার কারণে নিজের অপারগতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও উক্ত পোস্টটিতে লক্ষ্য করা যায়, পোস্টকারী ব্যক্তি ঘটনাটির লোকেশনের স্থানে খাগড়াছড়ির গুইমারা এলাকার নাম উল্লেখ করেন।
পরবর্তীতে উক্ত পোস্টের সূত্র ধরে Mohammad M S Roni নামের ওই ব্যক্তির প্রোফাইল পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ১৭ মার্চ তার প্রোফাইলেও আলোচিত ভিডিওটি রিলস আকারে প্রচারিত হতে দেখা যায়।

পোস্টটির শিরোনামে তিনি জানান উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর ঘটে। এছাড়াও পোস্টটি থেকে জানা যায়, এ ঘটনায় পুড়ে যাওয়া বাড়িটি তার-ই।
উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে সেসময় তার প্রোফাইলে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যালোচনা করে গতবছরের ২৪ অক্টোবর করা একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়।

পোস্টটিতে তিনি জানান, দূর্ঘটনাবশত গতবছরের ২৩ অক্টোবর তাদের বাড়িতে আগুন লাগে। যা মুহুর্তের মধ্যেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রূপ লাভ করে। এতে তাদের পুরো বাড়িঘর পুড়ে শেষ হয়ে যায়। এছাড়াও উক্ত পোস্টটিতেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার অন্যান্য ছবি ও ভিডিওর পাশাপাশি আলোচিত ভিডিওটিও দেখতে পাওয়া যায়। তবে পোস্টটির কোথাও উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সাথে জামায়াতে ইসলামী বা ছাত্রশিবিরের যুক্ত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি। পাশাপাশি তার পোস্ট এবং তার প্রোফাইল পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায় ভুক্তভোগী একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী।
সুতরাং, খাগড়াছড়ির মুসলিম বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পুরোনো ভিডিওকে নেত্রকোনায় হিন্দু বাড়িতে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের সাম্প্রতিক সময়ে আগুন দেওয়ার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।