০৮ মার্চ, বুধবার। দুপুরের দিকে জাতীয় দৈনিক ‘The Daily Star’ পত্রিকার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন রিউমর স্ক্যানার টিমের নজরে আসে। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, “ড. ইউনূস সরকারের অন্যায় আক্রমণের শিকার: প্রধানমন্ত্রীকে ৪০ বিশ্বনেতার খোলা চিঠি“।
ডেইলি স্টার লিখেছে, “নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো ‘একজন অনবদ্য পরিশুদ্ধ মানুষ এবং তার কার্যক্রমগুলো বাংলাদেশ সরকারের অন্যায় আক্রমণের শিকার হচ্ছে এবং বারবার হয়রানি ও তদন্তের মধ্যে পড়ছে’। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন ৪০ জন বিশ্বনেতা। বিষয়টিকে ‘বেদনাদায়ক’ উল্লেখ করে তারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন। চিঠিটি গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত হয়েছে।”

প্রতিবেদনে আলোচিত চিঠিটি এবং উক্ত চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ৪০ জন ব্যক্তির নাম ও পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিম পরবর্তীতে দেশের আরো কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে “চিঠিটি ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত হয়েছে” শীর্ষক তথ্যটি উল্লেখ পেয়েছে।
এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন আজকের পত্রিকা, দৈনিক আমাদের সময়।
এমনকি ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেও চিঠিটি ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দেখুন আজটাক।
ওয়াশিংটন পোস্টে গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ৭ মার্চ চিঠিটি প্রকাশিত হয়েছে এমন তথ্যকে সামনে রেখে আমরা ওয়াশিংটন পোস্টের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন কিওয়ার্ড সার্চ করেও উক্ত চিঠিটি খুঁজে পাইনি।
অধিকতর অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার টিম দেশের আরো কিছু গণমাধ্যমের এ সংক্রান্ত খবরগুলো পড়ে দেখেছে। এক পর্যায়ে জাতীয় দৈনিক মানবজমিন এর ওয়েবসাইটে একই বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন নজরে আসে আমাদের।
মানবজমিন লিখেছে, “মঙ্গলবার (০৭ মার্চ) চিঠিটি প্রকাশ করে ‘প্রটেক্ট ইউনূস ডট ওয়ার্ড প্রেস ডট কম’ জানিয়েছেঃ রাজনীতি, কূটনীতি, ব্যবসা, শিল্পকলা এবং শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রের ৪০ বিশ্বনেতা ৭ই মার্চ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি তার সরকারের আচরণ সম্পর্কে চিঠিটি পাঠিয়েছেন। ওই খোলা চিঠিটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত প্রভাবশালী ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাতে পূর্ণ-পাতার বিজ্ঞাপন হিসেবেও প্রকাশিত হয়েছে।”

অর্থাৎ, চিঠিটি প্রকাশ করেছে ‘প্রটেক্ট ইউনূস ডট ওয়ার্ড প্রেস ডট কম’ নামে কোনো একটি ওয়েবসাইট এবং চিঠিটি ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাতে পূর্ণ-পাতার বিজ্ঞাপন হিসেবেও প্রকাশিত হয়েছে।
এই দুই তথ্যের সূত্র ধরে আমরা ‘Protect Yunus’ নামক আলোচিত সাইটটি খুঁজে পাই এবং উক্ত সাইটে গত ০৭ মার্চ “Global Leaders Appeal to the Bangladeshi Prime Minister Regarding the Treatment of Professor Muhammad Yunus in An Open Letter” শিরোনামে প্রকাশিত খোলা চিঠিটিও খুঁজে পাই।
এখানেও উল্লেখ রয়েছে, খোলা চিঠিটি ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাতে পূর্ণ-পাতার বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে।

পরবর্তীতে Protect Yunus সাইটের অথোরিটির সাথে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করার পর তাদের পক্ষ থেকে ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত উক্ত বিজ্ঞাপনের একটি পিডিএফ কপি রিউমর স্ক্যানারের কাছে পাঠানো হয়।
দেখুন ছবিতে –

রিউমর স্ক্যানার টিম একই সময়ে নিজস্ব সূত্রের মাধ্যমে ০৭ মার্চ প্রকাশিত ওয়াশিংটন পোস্টের ৫৬ পাতার পুরো প্রিন্ট এডিশনটি সংগ্রহ করেছে।
দেখুন এখানে।
চিঠিটি কি পূর্ণ পাতা জুড়ে ছাপা হয়েছিল?
এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে আমরা দেখার চেষ্টা করেছি ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিটি পাতা সাধারণত কত কলামের হয়ে থাকে। ০৭ মার্চের পত্রিকাটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, কিছু পাতা চার কলামের হলেও অধিকাংশ পাতাই ৬ কলামে ছাপা হয়েছে।
তাছাড়া, ওয়াশিংটন পোস্টের ‘General Ad Service’ নামক একটি বিজ্ঞাপন রেটের পিডিএফ ফাইলেও উল্লেখ রয়েছে, পত্রিকাটির একটি পুরো পেজ ৬ কলাম এবং ২১ ইঞ্চির হয়ে থাকে।

সেদিন অর্থাৎ ০৭ মার্চ ওয়াশিংটন পোস্টের ৭ নং পৃষ্ঠায় উক্ত চিঠি বিষয়ক বিজ্ঞাপনটি ছাপা হয়। তবে পূর্ণ পাতাজুড়ে (৬ কলাম /২১ ইঞ্চি) চিঠিটি ছাপা হয়েছে শীর্ষক যে দাবি করা হচ্ছে তা সঠিক বলে প্রতীয়মান হয়নি।
কারণ, ওই পৃষ্ঠায় মোট ছয় কলামের মধ্যে এক কলামের পুরোটা জুড়ে অন্য খবর ছিল। আর চিঠির বিজ্ঞাপনের নিচের দিকে ভিন্ন একটি বিজ্ঞাপনও ছিল।

তাই, আলোচিত চিঠিটি ওয়াশিংটন পোস্টে পূর্ণ পাতাজুড়ে ছাপা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়।
কী আছে চিঠিতে?
“An Open Letter to the Prime Minister of Bangladesh About the Treatment of Nobel Laureate Muhammad Yunus” শীর্ষক শিরোনামের ইংরেজিতে লেখা চিঠিটির প্রথম প্যারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, “আমরা বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে আপনাকে লিখছি, যাঁরা আপনার দেশের জনগণের সাহস ও উদ্ভাবনী দক্ষতার প্রশংসা করে। আমাদের মধ্যে সরকারি কর্মচারী, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের নেতা ও সমাজসেবক আছেন। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের মতো আমরাও বাংলাদেশে উদ্ভাবিত ও সারা বিশ্বে গৃহীত উদ্ভাবনগুলো দ্বারা অনুপ্রাণিত। আপনার দেশের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা থেকেই আমরা আপনাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকদের একজন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মহান অবদানকে সমর্থন ও স্বীকৃতি দিতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে আপনাকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখছি।”
চিঠির পরবর্তী প্যারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বেই কাজ করার জন্য প্রফেসর ইউনূসের সুস্থতা এবং মানবিক অগ্রগতিতে অবদান রাখার ক্ষমতা নিয়ে আমাদের গভীর উদ্বেগ রয়েছে। আমরা নিশ্চিত, আপনি জানেন যে বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূসের অবদান, বিশেষ করে অতিদরিদ্র ও সবচেয়ে বিপদাপন্ন মানুষের জন্য তাঁর অবদান বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও সম্মানিত।”
এরপরই কিছু উদাহরণ তুলে দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
বলা হয়েছে,
- অধ্যাপক ইউনূস ইতিহাসের সাত ব্যক্তির মধ্যে একজন, যিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল পেয়েছেন। এই সাতজনের মধ্যে নেলসন ম্যান্ডেলা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, মাদার তেরেসা ও এলি উইজেলের মতো ব্যক্তিরা আছেন।
- তিনি ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। একে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন। যার ঋণগ্রহীতা ৯০ লাখ, তাদের ৯৭ শতাংশ নারী। প্রতিষ্ঠানটি লাখো মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছে। সারা বিশ্বের অন্যান্য ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির জন্য একটি মডেল তৈরি করেছে।
- ১৯৮০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে গ্রামীণ ব্যাংক ২০০-৫০০ মার্কিন ডলারের গৃহনির্মাণ ঋণ দেওয়া শুরু করে। এর মাধ্যমে সাড়ে সাত লাখের বেশি পরিবার গ্রামীণ বাড়ি তৈরি করেছে।
- অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ শক্তি প্রতিষ্ঠা করেন এবং নেতৃত্ব দেন। এই গ্রামীণ শক্তি ১৮ লাখের বেশি বাড়িতে সোলার হোম সিস্টেম চালু করেছে। হাজারো গ্রামীণ নারীকে এই সোলার সিস্টেম ইনস্টল ও মেরামতের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
- ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকমের গ্রামীণফোনে করা বিনিয়োগটি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বিনিয়োগ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। যা সারা দেশে সামাজিক উদ্ভাবন বিস্তারের সুযোগ করে দিয়েছে। যেমন গ্রামীণ ক্যালেডোনিয়ান কলেজ অব নার্সিং দেশের বৃহত্তম বেসরকারি নার্সিং কলেজ, দেশের দরিদ্রদের জন্য চারটি চক্ষু হাসপাতাল, ১৫০টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকসহ আরও অনেক কিছু আছে।
- ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নিম্ন আয়ের জনগণকে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের জন্য অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ আমেরিকা প্রতিষ্ঠা করেন, যার বেশির ভাগ ঋণই ২ হাজার ৫০০ ডলারের নিচে। এটি ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণের মাইলফলক অতিক্রম করতে চলেছে। এসব ঋণের পরিশোধের হার ৯৯ শতাংশ।
উপরের ছয়টি পয়েন্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, পয়েন্টগুলোতে মূলত ড. ইউনূসের বিভিন্ন অবদানের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
এরপর, চিঠিতে লেখা রয়েছে, “মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ টেলিকম বা গ্রামীণফোন থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হননি। বরং তিনি যেসব সংগঠন গড়ে তুলেছেন, সেগুলোর মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। তিনি ঢাকায় সাদামাটাভাবে বসবাস করছেন। মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন অনবদ্য পরিশুদ্ধ মানুষ ও তাঁর কার্যক্রমগুলো আপনার সরকারের অন্যায় আক্রমণের শিকার হচ্ছে। বারবার হয়রানি ও তদন্তের মধ্যে পড়ছে। এমনটা দেখতে পাওয়া বেদনাদায়ক।”
চিঠির এই অংশটিতে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের উপর অন্যায় আক্রমণ, হয়রানি এবং তদন্তের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তবে স্পষ্ট করা হয়নি, ঠিক কী ধরনের হয়রানি বা আক্রমণ তাঁর উপর করা হচ্ছে।
চিঠির পরবর্তী অংশে উল্লেখ রয়েছে, “আমরা বিশ্বাস করি, সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হলো, এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে চিরায়ত ও সামাজিক উদ্যোক্তারা প্রস্ফুটিত হতে পারেন।”
চিঠির শেষ অংশে ড. ইউনূসের সাথে কেমন আচরণ করা উচিত সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
“আমরা আশা করি, টেকসই অগ্রগতি নিশ্চিতে কীভাবে একটি প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজকে লালন করা যেতে পারে, সে বিষয়ে অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি মডেল হিসেবে বাংলাদেশ তার ভূমিকায় ফিরে আসবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম একটি ভালো উদ্যোগ হওয়া উচিত, অধ্যাপক ইউনূসের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া। তাঁকে নিজ নিরাপত্তায় ব্যস্ত রাখার পরিবর্তে দেশ ও বিশ্বের জন্য আরও ভালো কিছু করতে তাঁর শক্তিকে কাজে লাগানোর সুযোগ করে দেওয়া।”
“আমরা ও বিশ্বের কোটি মানুষ আশা করি, আপনি আমাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবেন।” শীর্ষক মন্তব্যের মাধ্যমে চিঠির ইতি টানা হয়েছে।

অর্থাৎ, পুরো চিঠির মূলত তিনটি অংশ রয়েছে। প্রথম অংশে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থানের প্রশংসা, দ্বিতীয় অংশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিভিন্ন অবদান এবং শেষ অংশে ড. ইউনূসের সাথে হওয়া অন্যায় প্রসঙ্গ এবং তাঁর সাথে কেমন আচরণ করা উচিত সে বিষয়ে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই চিঠিতে কারা স্বাক্ষর করেছেন সে বিষয়ে কিছুক্ষণ পরে আসা যাক। তার আগে চিঠিটি কে ছাপিয়েছে বা কাদের মাধ্যমে ছাপা হয়েছে সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।
ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন হিসেবে ছাপা হওয়া চিঠির নিচের অংশে লিখে রয়েছে, “For more information and to learn how you can help, visit https://protectyunus.wordpress.com/”
অর্থাৎ, চিঠিটির বিষয়ে জানতে প্রটেক্ট ইউনূস নামক একটি ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে ভিজিট করতে বলা হয়েছে উক্ত বিজ্ঞাপনে।
এই সাইটের বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যেই জানিয়েছি আপনাদের।
বিজ্ঞাপনে প্রটেক্ট ইউনূস সাইটের উল্লেখ থাকা থেকে প্রতীয়মান হয়, চিঠিটি এই সাইটের মাধ্যমেই ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন হিসেবে ছাপানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আমরা ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রকাশিত চিঠিটির সাথে Protect Yunus নামক সাইটে প্রকাশিত চিঠিটি মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি।
ওয়াশিংটন পোস্ট এবং প্রটেক্ট ইউনূস সাইটের প্রকাশিত চিঠির মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টের চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কোনো ঠিকানা উল্লেখ ছিল না। তবে প্রটেক্ট ইউনূস সাইটে প্রধানমন্ত্রী ঠিকানা “প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পুরাতন সংসদ ভবন, তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ” উল্লেখ করা হয়েছে।

তাছাড়া, বিজ্ঞাপন হিসেবে ছাপা হওয়া চিঠির শিরোনামে চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের বিষয়ে (বিশ্বনেতা বা প্রাসঙ্গিক পদবি) কোনো তথ্য উল্লেখ ছিল না। চিঠির ভেতরের অংশে স্বাক্ষরকারীরা নিজেদের সরকারি কর্মচারী, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের নেতা ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
অন্যদিকে প্রটেক্ট ইউনূস সাইটের প্রকাশিত চিঠির শিরোনামে স্বাক্ষরকারীদের বিশ্বনেতা (Global Leader) হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। একইসাথে উক্ত বিশ্বনেতারা রাজনীতিক, কূটনীতিক, ব্যবসা, শিল্প এবং একাডেমিক ক্ষেত্রের ব্যক্তি বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
৪০ জনই কি বিশ্বনেতা?
আলোচিত চিঠিটিতে সই করেছেন সংগীতজ্ঞ ও অধিকারকর্মী বোনো; ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন; ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট লর্ড মার্ক ম্যালোচ ব্রাউন; সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন; রেজাল্টস অ্যান্ড সিভিক কারেজের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ডেলি-হ্যারিস; ডাল্লায়ার ইনস্টিটিউট ফর চিলড্রেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির প্রতিষ্ঠাতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) রোমিও ডাল্লায়ার; এমেরিতা চিলড্রেন ডিফেন্স ফান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট মারিয়ান রাইট এডেলম্যান; মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিসেন্ট ফক্স; সংগীতজ্ঞ পিটার গ্যাব্রিয়েল; নাসার সাবেক মহাকাশচারী রন গারান; ইউনিসেফের সাবেক উপনির্বাহী পরিচালক ও জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব কুল গৌতম; গ্লাসগো ক্যালেডিনিয়ান ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য ও ইমেরিটাস অধ্যাপক পামেলা গিলিস; রকফেলার ফাউন্ডেশন ও ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পিটার সি গোল্ডমার্ক জুনিয়র; অধিকারকর্মী জেন গুডাল; যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর; রোটারি ইন্টারন্যাশনালের সিইও জন হিউকো; উদ্যোক্তা ও সমাজসেবী মো. ইব্রাহিম; ইংল্যান্ডের হাউস অব লর্ডসের কেসি মেম্বার ব্যারনেস হেলেনা কেনেডি; রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি; টেড কেনেডি জুনিয়র; ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট বিনোদ খোসলা; জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন; গায়ক, গীতিকার ও অধিকারকর্মী অ্যানি লেনক্স; মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আর্থার লেভিট; সাবেক মার্কিন কম্পট্রোলার অব দ্য কারেন্সি ও স্প্রিং হারবার হোল্ডিংসের জেন লাডউইগ; ভিএমওয়্যারের সাবেক সিইও পল মারিজ; ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব শিকাগোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সিইও মাইকেল এইচ মস্কো; ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তি; চ্যাথাম হাউসের সাবেক প্রধান নির্বাহী স্যার রবিন নিবলেট; বিশ্বব্যাংকের সাবেক ইউএস বোর্ড ডিরেক্টর ও সাউদার্ন ব্যান করপোরেশনের উপদেষ্টা জ্যান পিয়ারসি; ইয়েল ল স্কুলের স্টার্লিং প্রফেসর অব ল রবার্ট পোস্ট; মিশিগানের সাবেক মার্কিন সিনেটর এবং ব্যাংকিং, হাউজিং ও নগর উন্নয়নসংক্রান্ত সিনেট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান ডোনাল্ড রিগেল; আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন; এলেন সিডম্যান; অভিনেত্রী ইয়ার্ডলি স্মিথ; অভিনেত্রী শ্যারন স্টোন; ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ইমেরিটাস অধ্যাপক ডেভিড সুজুকি; অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সাইড স্কুল অব বিজনেসের সাবেক ডিন পিটার তুফানো; বৈশ্বিক নারীবিষয়ক সাবেক মার্কিন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মিলেন ভারভির এবং উইকিপিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা জিমি ওয়েলস।

প্রটেক্ট ইউনূস সাইট এবং পরবর্তীতে দেশের গণমাধ্যমে চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের বিশ্বনেতা হিসেবে অভিহিত করেছে।
বিশ্বনেতার সংজ্ঞা আসলে কী সেটা জানতে আমরা ‘ক্যামব্রিজ ডিকশনারী‘তে দেখেছি, সেখানে দুটো ক্যাটাগরিতে গ্লোবাল লিডার বা বিশ্বনেতার সংজ্ঞা এসেছে। কমার্স ক্যাটাগরিতে বলা হয়েছে, গ্লোবাল লিডার হচ্ছে একটি কোম্পানি, প্রোডাক্ট ইত্যাদি যার বিক্রি বিশ্বের অন্যান্য অংশে তার প্রতিযোগীদের তুলনায় বেশি।
অন্যদিকে, রাজনীতি ক্যাটাগরিতে গ্লোবাল লিডারের সংজ্ঞায় এসেছে, একটি গোষ্ঠী, দেশ, ইত্যাদির নিয়ন্ত্রণে থাকা একজন ব্যক্তিকে গ্লোবাল লিডার বোঝায়, যিনি বিশ্বের সমস্ত অংশে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে স্বীকৃত।

২০০৬ সালের এক গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বিশ্বনেতা বলতে সাধারণত নির্বাহী হিসেবে কর্মরতদের সংজ্ঞায়িত করা হয় যারা তাদের কাজের মাধ্যমে জটিল, পরিবর্তনশীল এবং প্রায়শই অস্পষ্ট বৈশ্বিক পরিবেশের মাধ্যমে কার্যকরভাবে নিজেদের দায়িত্ব পরিচালনা করে।
আরেক গবেষণায় এসেছে, বিশ্বনেতারা হচ্ছেন উচ্চ পর্যায়ের পেশাদার যেমন নির্বাহী, ভাইস প্রেসিডেন্ট, ডিরেক্টর এবং ম্যানেজার যারা কিছু গ্লোবাল লিডারশিপ অ্যাক্টিভিটি (যেমন গ্লোবাল ইন্টিগ্রেশন দায়িত্ব) নিয়ে কাজ করছেন। বৈশ্বিক নেতারা একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধার বিকাশ এবং টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
এই সংজ্ঞাগুলো লক্ষ্য করলে দেখবেন, সংজ্ঞাগুলোয় ঢালাওভাবে সকল পেশার মানুষকে বিশ্বনেতা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়নি। বিশ্বনেতা হিসেবে তাদেরই বোঝানো হয়েছে, যারা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কাজের মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রভাব রাখতে সক্ষম হয়েছেন।
ড. ইউনূস প্রসঙ্গে লেখা খোলা চিঠিতে যে ৪০ জন স্বাক্ষর করেছেন তাদের পরিচয় সহজভাবে বোঝাতে আমরা ১১টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছি।
ছবিতে পুরো বিষয়টি দৃশ্যমান –

১১ টি ক্যাটাগরির মধ্যে যেসব পেশার ব্যক্তিরা এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন তারা হলেন উদ্যোক্তা / ব্যবসায়ী / ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক, শিল্পকলা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সামাজিক / আইনি /গণতান্ত্রিক সংস্থা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাবেক জাতিসংঘ কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, একটিভিস্ট, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, সাবেক মন্ত্রী ,সাবেক প্রেসিডেন্ট, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, বিজ্ঞানী (কম্পিউটার, রাষ্ট্র, নাসার সাবেক মহাকাশচারী), সংবাদমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।
অবাক করার বিষয় হচ্ছে, চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে ‘মা’ পরিচয়ে একজনের নাম উল্লেখ রয়েছে। শ্যারন স্টোন নামে উক্ত নারী অবশ্য পেশায় একজন অভিনেত্রী, যা আমরা ক্রসচেকে জানতে পেরেছি। কিন্তু তার ‘অভিনেত্রী’, পরিচয় গোপন করে ‘মা’ পরিচয় কেন ব্যবহার করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
আমরা বিশ্বনেতার যে সংজ্ঞা পেয়েছি সে অনুযায়ী স্বাক্ষরকারীদের অধিকাংশই বিশ্বনেতা নয়।
স্বাক্ষরকারীরা কী বলছেন?
ড. ইউনূস প্রসঙ্গে লেখা চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিরা সত্যিই স্বাক্ষর করেছিলেন কিনা এ বিষয়টি নিশ্চিত হতে আমরা একাধিক স্বাক্ষরকারীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি।
উদ্যোক্তা ও সমাজসেবী মো ইব্রাহিমের (Mo Ibrahim) বিষয়ে জানতে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম তার প্রতিষ্ঠান ‘Mo Ibrahim Foundation’ এ। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছে যে, মো ইব্রাহিম চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। তবে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তারা জানিয়েছেন, চিঠিতে স্বাক্ষর করলেও চিঠিটি কোথায় প্রকাশিত হবে সে বিষয়টি জনাব ইব্রাহিম জানতেন না।
রিউমর স্ক্যানার টিম চিঠিতে স্বাক্ষরকারী যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ল’ স্কুলের আইনের অধ্যাপক রবার্ট পোস্টের (Robert Post) সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও নিশ্চিত করেন যে, তিনি চিঠিটিতে স্বাক্ষর করেছেন। রবার্ট পোস্টও জানিয়েছেন যে, চিঠিটি কোথায় প্রথম প্রকাশিত হবে সে বিষয় তিনিও জানতেন না।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আরো দুইজন (কুল চন্দ্র গৌতম এবং মার্ক ম্যালোচ ব্রাউন) চিঠিতে স্বাক্ষর করার বিষয়টি টুইটারে টুইট করে নিশ্চিত করেছেন।
ওয়াশিংটন পোস্টে এই বিজ্ঞাপন ছাপাতে কত খরচ হয়েছে?
ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন খরচের বিষয়ে অনুসন্ধানে, দেশীয় মূলধারার গণমাধ্যম ‘সময় নিউজ‘ এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আলোচিত চিঠিটি ওয়াশিংটন পোস্টে ছাপাতে খরচ হয়েছে ৭৩ হাজার ৩৩ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ৭৮ লাখ ১৪ হাজার ৫৮৪ টাকা)।
পরবর্তীতে ওয়াশিংটন পোস্টের ওয়েবসাইটে তাদের বিজ্ঞাপন রেট নিয়ে একটি পিডিএফ খুঁজে পাওয়া যায় এবং এটি সর্বশেষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে হালনাগাদ করা হয়েছে।
আলোচিত চিঠির বিজ্ঞাপনটি পত্রিকার ৭ম পাতার পাঁচ কলাম জুড়ে প্রকাশিত হয়েছে। তাহলে সর্বশেষ ২০২১ সালের বিজ্ঞাপন রেট অনুযায়ী, সাড়ে ১৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের পাঁচ কলামের এই বিজ্ঞাপন ছাপাতে খরচ হওয়ার কথা প্রায় ৫২ হাজার ১২৮ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় ৫৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬৯৬ টাকা)।
কিন্তু ২০২১ সালের পর জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় পত্রিকার বিজ্ঞাপন রেটও বেড়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের বিজ্ঞাপন রেট বাড়িয়েছে কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারিনি আমরা।
Protest Yunus সাইটের কার্যক্রম ওয়ার্ডপ্রেসের ফ্রি ডোমেইনে কেন?
বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্লগ পাবলিশিং এপ্লিকেশন হিসেবে পরিচিত ওয়ার্ডপ্রেস। ওয়ার্ডপ্রেসের ফ্রি সাবডোমেইন .worldpress.com ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে https://protectyunus.wordpress.com নামক বহুল আলোচিত সাইটটি।
সাইটের ‘About’ পাতায় বলা হয়েছে, “এই ব্লগটি নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সুরক্ষা সম্পর্কিত তথ্যের জন্য একটি ক্লিয়ারিংহাউস তৈরি করার জন্য স্থাপন করা হয়েছিল। এটি বিশ্বজুড়ে গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিদের মধ্যে একটি সমন্বিত সহযোগিতার বহিঃপ্রকাশ।”

২০১৭ সালের ১৪ মার্চ সাইটটিতে প্রথম একটি ব্লগ প্রকাশের মাধ্যমে এর কার্যক্রম চালু হয়। উক্ত ব্লগে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগে সভাপতি (Chair) হিসেবে রয়েছেন জোয়ান্নে কার্টার, যিনি মার্কিন নির্দলীয় নাগরিকদের অ্যাডভোকেসি সংস্থা ‘Results’ এর একজন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর।
প্রথম ব্লগের পর বিভিন্ন সময়ে ড. ইউনসূের বিষয়ে বিভিন্ন ব্লগ প্রকাশ করা হয়েছে সাইটটিতে, যার সর্বশেষটি হলো গত ০৭ মার্চ প্রকাশিত আলোচিত খোলা চিঠি।
সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত চিঠিটি মূলত একটি বিজ্ঞাপন এবং ৪০ জন বিভিন্ন পেশার ব্যক্তি উক্ত চিঠিতে স্বাক্ষর করলেও একাধিক স্বাক্ষরকারী নিশ্চিত করেছেন, চিঠিটি কোথায় প্রকাশিত হবে সে বিষয়ে তারা জানতেন না। তাছাড়া, স্বাক্ষরকারীদের বিশ্বনেতা হিসেবে আখ্যা দেওয়া হলেও গুটিকয়েক ছাড়া অধিকাংশ ব্যক্তিরই বৈশ্বিক প্রভাব নেই।
তথ্যসূত্র
- Statement from Protect Yunus Site Authority
- Statement from Mo Ibrahim
- Statement from Robert Post
- The Washington Post: 07 March 2023 Print Edition
- Protect Yunus: Global Leaders Appeal to the Bangladeshi Prime Minister Regarding the Treatment of Professor Muhammad Yunus in An Open Letter
- The Washington Post: General Ad Service
- Rumor Scanner own Analysis