ভারতীয় নারীর ছবি ব্যবহার করে বাংলাদেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দাবিতে প্রচার 

সম্প্রতি, “এক শেখের বেটির উছিলায় নিরাপদ ছিলো কোটি কোটি বাপের বেটি, আজ দেশে শুধু ধর্ষণ হত্যা-গুম-মামলা-হামলা নির্যাতন এগুলা ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাইনা” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ছবিতে এক নারীর মৃতদেহ জঙ্গলে পড়ে থাকতে দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে প্রচারিত ছবিটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতের ঘটনাকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার হচ্ছে।   

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Konmani Rajbongshi Konmani’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১০ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে সংযুক্ত প্রথম ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত পোস্টে দাবি করা হয়, ‘২৩ বছর বয়সী এক তরুণীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তার নাম ও ঠিকানা আধার কার্ডে দেওয়া আছে। মেয়েটিকে ধেমাজির গাইনোদি রেল ব্রিজের পাশে অচেতন অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে। সম্ভবত এটি একটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে। ঠিকানা: মারকত্ব, দিনাবান কলিতা, শিলআলি মাঝু গাঁও, জামুগুড়ি পাঠআলি, ১ নং বিষ্ণুপুর, ধেমাজি, আসাম – ৭৮৭০৫৭’ (অনূদিত)

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘News18 Assam’ এর ওয়েবসাইটে গত ১০ অক্টোবর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ধেমাজির গাইনদী নদীর তীরে যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত যুবতীর নাম জ্যোতিকা কলিতা। পরিবারের সন্দেহ, কোনো দুষ্কৃতিকারী তাকে হত্যা করেছে। জ্যোতিকা ধেমাজি জেলার বিষ্ণুপুরের শিলআলি মাজগাঁও এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি একজন মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। ৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) তিনি বাড়ি থেকে ধেমাজি শহরে গিয়ে একটি পার্লারে প্রশিক্ষণ নেন এবং বিকেল ৪টার দিকে পার্লার থেকে বের হন। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন ধেমাজি শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে গাইনদী রেলওয়ে ব্রিজের পাশে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহের গলায় কালচে দাগ পাওয়া গেছে এবং মুখ থেকে ফেন বের হতে দেখা গেছে। মৃতদেহ থেকে কিছুটা দূরে AS22K2117 নম্বরের একটি স্কুটি উদ্ধার করা হয়েছে। (অনূদিত)

সুতরাং, ভারতের আসামে নারীর মৃত্যুর ঘটনাকে বাংলাদেশে ধর্ষণের পর হত্যা শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img