মেহেরপুরের আ. লীগ নেতাকে বিএনপির নেতাকর্মীরা কুপিয়ে জখম করেছে দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বিএনপির নেতাকর্মীরা মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিকে কুপিয়ে জখম করেছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের কুপিয়ে জখম করেছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিজেপির আদিবাসী নেতা ও সংসদ সদস্য খগেন মুর্মুকে মারধরের ঘটনার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে BJP Tripura এর ফেসবুক পেজে গত ৬ অক্টোবর একই ভিডিও প্রচার হতে দেখা যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনামে উল্লেখ করা হয়, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া আহত ব্যক্তির নাম খগেন মুর্মু। তিনি একজন আদিবাসী নেতা ও সংসদ সদস্য। এছাড়াও পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়, বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে তিনি হামলার শিকার হন। পাশাপাশি ভিডিওতে আহত খগেন মুর্মুর পাশে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর পোশাক পরিহিত একজন ব্যক্তিকে দেখতে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম News Bangla 18 এর ওয়েবসাইটে গত ৬ অক্টোবর একই ঘটনায় নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ, ধস্তাধস্তিতে মাথা ফাটল সাংসদ খগেন মুর্মুর শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, খগেন মুর্মু মালদহ উত্তরের বিজেপির সাংসদ। প্রতিবেদন প্রকাশের দিন তিনি জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার বামনডাঙ্গায় বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গেলে এলাকাবাসী তাদের ওপর হামলা চালান বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ সময় তার গাড়ি ভাংচুর করা হয়। পাশাপাশি হামলায় তার মাথাও ফেটে যায় বলে প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। 

এছাড়াও অনুসন্ধানে জানা যায়, মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর গ্রেফতার হন। সে বছরের ৪ আগস্ট মেহেরপুরের কলেজ মোড়, চুলকুনি মোড় ও কোর্ট মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও অভিভাবকদের অবস্থান কর্মসূচিতে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দায়েরকৃত এক মামলায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন ও তাকে গ্রেফতার করা হয়।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশেরই নয়। 

সুতরাং, ভারতের বিজেপি নেতাকে মারধরের ভিডিওকে মেহেরপুর জেলার আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা কুপিয়ে জখম করেছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img