জুলাই শহীদ জসীমের মেয়ে লামিয়াকে ধর্ষণ মামলায় এজাহার নামীয় আসামীর জামিনের তথ্যটি ভুয়া

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত হওয়া জসীমের কন্যা কলেজছাত্রী লামিয়া গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। ঘটনার পরের দিন ১৯ মার্চ লামিয়া নিজেই বাদী হয়ে অভিযুক্তদের ২জনকে আসামি করে দুমকি থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ অভিযুক্ত সাকিব মুন্সী ও সিফাত মুন্সীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এ ঘটনার পর লামিয়া মায়ের সঙ্গে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার শেখেরটেকে ভাড়া বাসায় চলে যান। পরবর্তীতে গত ২৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১০টায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পর এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়, “শহীদের মেয়েকে ধর্ষণ করেও কেবলমাত্র বিএনপি নেতার ছেলে হওয়ার কারণে ধর্ষককে ছেড়ে দিল আসিফ নজরুল। অভিমানে আত্মহত্যা করেছে ধর্ষিতা শহীদ কন্যা।”

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শহীদ জসীমের মেয়ে লামিয়াকে ধর্ষণ মামলায় এজাহার নামীয় আসামীর জামিনের দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে লামিয়ার মামলার এজাহার নামীয় আসামি সাকিব মুন্সি ও সিফাত মুন্সি ২ জনই জেল হাজতে রয়েছেন, তাদের জামিন হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৭ এপ্রিলে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলনের শহীদ জসিম উদ্দিন এর কন্যা লামিয়া নির্য্যাতনের মামলার ধৃত আসামি দ্বয় জেল হাজতে আটক আছে। এ বিষয়ে কাউকে কোন রকম বিভ্রান্তিকর প্রচার প্রচারণা না করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।”

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে ২৯ এপ্রিলে এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনে বলা হয়, “…অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে সরেজমিনে জানা যায়, মামলা হওয়ার পর থেকে সাকিব মুন্সী এবং সিফাত মুন্সী দুজনই জেল হাজতে। তাদের জামিন হয়নি।..”

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিতের লক্ষ্যে দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাকির হোসেনের সাথে রিউমর স্ক্যানার টিম যোগাযোগ করলে তিনি জানান, লামিয়ার মামলায় এজাহার নামীয় আসামী সাকিব মুন্সী ও সিফাত মুন্সী দুজনই জেল হাজতে রয়েছেন। তাদের জামিন হয়নি। প্রচারিত দাবিটি গুজব।

সুতরাং, শহীদ জসীমের মেয়ে লামিয়াকে ধর্ষণ মামলায় এজাহার নামীয় আসামীর জামিনের দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img