সম্প্রতি, এক ব্যক্তিকে গাছে বেঁধে আগুনের তাপ দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা দাবি করা হচ্ছে, উক্ত ব্যক্তি হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাছে বেঁধে আগুনের তাপ দেওয়া ব্যক্তি হিন্দু নন বরং, তিনি মুসলিম ধর্মাবলম্বী। তার নাম শহিদুল এবং বাবার নাম কিম্মত আলী।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গতকাল (১০ মার্চ) Parvez Mallik নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

উক্ত পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, (হবিগঞ্জের) যমুনাবাদে দুই মোবাইল চোরকে আটক করে জনতা।
একই দিনে Md Tufajjol Islam নামক আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত আরেকটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে মোবাইল চুরির অভিযোগে যমুনাবাদে আটক হওয়া ব্যক্তিকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। বক্তব্যে আটক হওয়া ব্যক্তি বলেন, তার নাম শহিদুল এবং বাবার নাম কিম্মত আলী।
পরবর্তী অনুসন্ধানে স্থানীয় গণমাধ্যম দৈনিক হবিগঞ্জ সমাচারের ওয়েবসাইটে আজ (১১ মার্চ) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০৮ মার্চ হবিগঞ্জ উপজেলার লামাতাসি ইউনিয়নের যমুনাবাদ (৬নং ওয়ার্ড) গ্রামের আব্দুল কাইয়ূম মিয়ার বাড়ি থেকে দুটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। এ ঘটনার পরদিন (০৯ মার্চ) সন্দেহভাজন চোর হিসেবে একই উপজেলার তারাপাশা গ্রামের কিম্মত আলীর ছেলে সাহিদুলকে আটক করে স্থানীয় জনতা। এ সময় তাকে উত্ত্যম-মধ্যম দিলে তার সহযোগি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়নের বনদক্ষিন গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে জায়েদ মিয়া মোবাইল চুরির সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানায়। পরে সাহিদুলের কথানুযায়ী স্থানীয় কটিয়াদি বাজার থেকে জায়েদ মিয়াকে আটক করে যমুনাবাদে নিয়ে যান জনতা। এক পর্যায়ে তাকেও উত্ত্যম-মধ্যম দেয়া হয়। এ সময় সে মোবাইল চুরির সাথে জড়িত নয় বললে জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের একাংশ পুড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আ.ক.ম উস্তার মিয়া তালুকদার ঘটনাস্থলে পৌছলে তার কাছে উল্লেখিতরা মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করে। পরে মুচলেকার মাধ্যমে তাদের পরিবারের লোকজন ও লস্করপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মতিন এবং তারাপাশা গ্রামের বাসিন্দা সাধন মিয়ার জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
অর্থাৎ, গাছে বেঁধে রাখা ব্যক্তিটি হিন্দু নন, মুসলিম ধর্মের অনুসারী।
সুতরাং, মোবাইল চুরির অভিযোগে গাছে বেঁধে আগুনে তাপ দেওয়া মুসলিম যুবককে হিন্দু দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- Parvez Mallik- Facebook Post
- Md Tufajjol- Facebook Post
- Habiganj Samachar- বাহুবলের যমুনাবাদে দুই মোবাইল চোরকে উত্ত্যম-মধ্যম \ অগ্নিসংযোগ