অটোরিকশা চালকদের আন্দোলনে সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে মৃত্যুর ভুয়া দাবি

গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন। প্রতিবাদে ২০ নভেম্বর থেকেই আন্দোলনে নামে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকরা। এর প্রেক্ষিতে ২০ এবং ২১ নভেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে রিকশাচালকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সংবাদ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। ২১ নভেম্বরের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বেশ কিছু পোস্টে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লাঠির আঘাতে একজন অটোরিকশা চালক মারা গেছেন। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের আন্দোলনে কোনো চালকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বরং কোনো প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২১ নভেম্বর “মহাখালীতে রেলপথে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবরোধে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ভাঙচুর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন ঢাকার মহাখালীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশের প্রতিবাদে সকাল ৯টা থেকে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা। অবরোধ চলাকালীন দুপুরের দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ও আশপাশের কয়েকটি জায়গায় ভাঙচুর করা হয়। তবে উক্ত প্রতিবেদনে কোনো ব্যক্তি মারা যাওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর ওয়েবসাইটে গত ২১ নভেম্বর তারিখে “খিলগাঁও থেকে ৫ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালককে আটক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশের প্রতিবাদে আন্দোলনরত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের সাথে সেখানকার কিছু শিক্ষার্থীদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটে। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং র‌্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এই প্রতিবেদনেও আন্দোলনকে ঘিরে কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি।

মূল ধারার অন্যান্য গণমাধ্যম সূত্রেও এই আন্দোলনে কোনো মৃত্যুর তথ্য মেলেনি। 

এর আগের দিন অর্থাৎ ২০ নভেম্বরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে চালকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দুইজন পুলিশ আহত হন। 

এ বিষয়ে জাতীয় দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর স্টাফ রিপোর্টার আব্বাস উদ্দীন নয়ন রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলনে কোনো মৃত্যুর তথ্য তিনি পাননি। একই তথ্য দেন চ্যানেল২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার সুলতান মাহমুদ আরিফ।

সুতরাং, ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে সেনাবাহিনীর লাঠির আঘাতে একজন অটোরিকশা চালক মারা যাওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img