সম্প্রতি, “পাকিস্তানের এক ইমাম ৩৪ বছর পর তার কবর ভেঙে গেলে মুসল্লীগন দেখেন জীবন্ত লাশ।” শীর্ষক শিরোনামে মাটি চাপা দেওয়া এক ব্যক্তির ছবি সম্বলিত কিছু পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
একই ছবি ব্যবহার করে ৩২ বছর পরও অক্ষত মৃতদেহ দাবিতে ফেসবুক প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
একই ছবি ব্যবহার করে ৪০ বছর পরও অক্ষত মৃতদেহ দাবিতে এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ছবিটি ৩২, ৩৪ বা ৪০ বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করা কোনো ব্যক্তির নয় বরং ২০১৯ সালে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হওয়া ব্যক্তিকে বাঁচাতে মাটিচাপা দেওয়ার পদ্ধতি ব্যবহারের সময় ধারণ করা ছবি এগুলো।
রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ছবিটি পাকিস্তানের সমাজকর্মী এবং লেখক Ali Sherazi এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ২০১৯ সালের ২২ জুন প্রকাশিত একটি পোস্টে (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।
পোস্ট থেকে জানা যায়, আলী সেরাজিকে জনৈক নারী উক্ত ছবি পাঠিয়েছেন। যে উক্ত নারীর বাবা তিনি। তার বাবা বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে অচেতন অবস্থায় থাকার কারণে ওই নারী তার বাবার জন্য দোয়া চেয়েছেন।
রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে আলী সেরাজির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিশ্চিত করেন যে উক্ত ছবিগুলো এক নারী তার বাবার জন্য দোয়া চেয়ে তাকে ইনবক্সে পাঠিয়েছিলেন। জনৈক সেই নারীকে শনাক্ত করতে না পারলেও লেখক ও সমাজকর্মী আলী সেরাজির সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আলোচ্য ছবির ব্যক্তি ৩২, ৩৪ বা ৪০ বছর পূর্বে মারা যায়নি। তাছাড়া, এটি কোনো মৃতদেহেরও ছবিও নয়।
মূলত, ২০১৯ সালে পাকিস্তানি লেখক আলী সেরাজিকে এক নারী তার বিদ্যুৎপৃষ্ট বাবাকে মাটিচাপা দিয়ে রাখার কিছু ছবি পাঠিয়ে বাবার জন্য দোয়া চান। সেই ছবি তিনি তার ফেসবুক পেজে প্রকাশ করার পর সেই ছবি ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে ৩২, ৩৪ বা ৪০ বছর পূর্বে মৃত ব্যক্তির অক্ষত লাশের ছবি বলে প্রচার হয়ে আসছে।
২০২২ সালের আগস্ট মাসে একই ছবি ব্যবহার করে ৩২ বছর আগে মারা যাওয়া ব্যক্তির অক্ষত মৃতদেহ দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সে সময়ে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।