সম্প্রতি, “ওরে.. হুজুরের লাল পানির ব্যবসারে.. মাগো মা…” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মদের বোতল বিক্রির অভিযোগে হুজুর গ্রেফতারের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং এটি পাকিস্তানের করাচির ঘটনা।
কী-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে পাকিস্তানের গণমাধ্যম The Frontier Post এর ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর প্রকাশিত “করাচিতে ‘জব্দ’ মদ বিক্রির সঙ্গে জড়িত কাস্টমস কর্মচারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে (অনুবাদিত)” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায় এবং এই প্রতিবেদনে প্রকাশিত একটি ছবির সাথে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ করাচিতে শুল্ক বিভাগ দ্বারা জব্দ করা মদ বিক্রি করার জন্য ওই ভিভাগের দুই কর্মী ইউনুস এবং খালিদকে গ্রেপ্তার করেছে। ইউনুস কাস্টমস গুদামে একজন প্রহরী হিসাবে কাজ করে এবং খালিদও সেখানকার একজন কর্মচারী এবং তারা কাস্টমস বিভাগের দেওয়া একটি ফ্ল্যাটে থাকেন।
এছাড়াও, MM News নামক অন্য একটি পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যমে ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরে “মদের বোতল বিক্রির অভিযোগে কাস্টমস কর্মচারীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ (অনুবাদিত)” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয় গ্রেফতারকৃত ইউনুস তার ক্লায়েন্টদের কাছে মদ্যপ পানীয় পরিবহনের জন্য রিকশা চালাত। অন্যদিকে, ইউনুস এবং গ্রাহকদের মধ্যে চুক্তির দালালি করতেন খালিদ।
তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে তারা তাদের অন্য ছয় সহযোগীর সাথে করাচির ক্লিফটন এবং ডিফেন্স এলাকায় গত সাত বছর ধরে লক্ষ লক্ষ টাকার মদের বোতল বিক্রির সাথে জড়িত ছিল।
মূলত, ২০১৯ সালে পাকিস্তানের করাচিতে কাস্টমসের দুইজন কর্মচারীকে মদ্যপ পানীয় পরিবহনের অপরাধে আটক করে পুলিশ। উক্ত ধারণকৃত একটি ছবি বর্তমানে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের ফেসবুক আইডি/পেজ থেকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে উক্ত ঘটনাটি পাকিস্তানের হলেও সেই সম্পর্কিত কোনো তথ্য উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
বিভ্রান্তির নমুনাঃ
সুতরাং, পাকিস্তানে মদের বোতল বিক্রির অভিযোগে কাস্টমস কর্মচারীদের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনাটি ছবি যথাযথ প্রেক্ষাপট উল্লেখ না করে বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
The Frontier Post: Customs employees involved in selling ‘seized’ liquor arrested in Karachi
MM News TV: Police arrests customs employees for selling liquor bottles
ARY NEWS: CUSTOMS EMPLOYEES INVOLVED IN SELLING ‘SEIZED’ LIQUOR ARRESTED IN KARACHI