চট্টগ্রাম নগরে একটি পূজামণ্ডপের অনুষ্ঠান মঞ্চে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। অনেক নেটিজেন ভিডিওটি সম্পাদিত বা এডিটেড বলে দাবি করলেও রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখতে পায়, ভিডিওটি সম্পাদিত নয়, আলোচিত সংগীতটি উক্ত মঞ্চে পরিবেশিত হয়েছিল। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে পূজার মঞ্চে “দে দে পাল তুলে দেন” শীর্ষক গান পরিবেশনের ভিন্ন দুইটি ভিডিও সামনে এনেছেন নেটিজেনরা। গানের একটি দলের উক্ত গান পরিবেশনে একটি ভিডিওতে ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ ক্যাপশনে প্রচার করে বাংলাদেশেরই ভিডিও বলে প্রচার হচ্ছে।
ফেসবুকে পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
অন্য আরেকটি ভিডিওতে এক নারীকে পূজা মঞ্চে একই গান পরিবেশন করতে দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিওকেও বাংলাদেশের বলে প্রচার করা হচ্ছে।
ফেসবুকে পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দুইটি ভিডিও বাংলাদেশের নয় বরং একটি ভিডিও সম্প্রতি কলকাতার এবং অন্যটি ২০১৮ সালে ভারতের ব্যাঙ্গালারের।
গানের দলের আলোচিত গান পরিবেশনের ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউটিউবে শিউলি চক্রবর্তী নামে চ্যানেলে গত ১১ অক্টোবর একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর বিস্তারিত বর্ণনা থেকে জানা যাচ্ছে, গানটি নবোধয় সংঘ দুর্গাপূজা কমিটির আয়োজনে একটি পূজা মঞ্চে পরিবেশন করেন শিউলি চক্রবর্তী, তার ছেলে এবং তার সুর সাধনা স্কুলের শিক্ষার্থীরা৷
শিউলি চক্রবর্তীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই মঞ্চে থাকা ব্যানারের স্পষ্ট একটি ছবি পাওয়া যাচ্ছে যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, এটি কলকাতার একটি পূজা মন্ডপের দৃশ্য।
দ্বিতীয় ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর ফেসবুকে স্বপন কুমার দাশ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করতে দেখা যায়৷ ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, এটি কেএসইউসি পূজার মন্ডপের দৃশ্য। যিনি গান পরিবেশন করছেন তার নাম সুতপা গাঙ্গুলি।
কেএসইউসির ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, এটি ভারতের ব্যাঙ্গালোরের একটি অলাভজনক সামাজিক সংগঠন। সংগঠনটি প্রতি বছর দুর্গা উৎসব পালন করে আসছে। ভিডিওটি সংগঠনটির সেই আয়োজনের ২০১৮ সালের দৃশ্য।
সুতরাং, দুর্গাপূজার মঞ্চে সংগীত পরিবেশনের ভারতের দুইটি ভিডিওকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।