রবিবার থেকে টিকটক বন্ধের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়

সম্প্রতি, জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

পোস্টগুলোর মন্তব্যের ঘর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পোস্টগুলোতে স্থানের নাম উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক বন্ধের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, আইনী জটিলতার কারণে আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক তাদের কার্যক্রম বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। 

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর ওয়েবসাইটে গত ১৫ জানুয়ারি রোববার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে টিকটক শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: bangla.bdnews24

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, অ্যাপটির চীনা মালিকানা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে টিকটকের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট নিষেধাজ্ঞা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ফেডারেল নিষেধাজ্ঞা আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে মিল রেখে রোববার থেকে মার্কিন ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাপটি বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে টিকটক। এতে করে নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাপটি ডাউনলোড করা নিষিদ্ধ হবে। তবে, যেসব ব্যবহারকারী ইতোমধ্যে এটি ব্যবহার করছেন, তারা কিছু সময়ের জন্য চালিয়ে যেতে পারবেন।

এছাড়াও জানা যায়, গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে পাশ হওয়া নতুন আইন অনুসারে ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম বিক্রি করার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি আইন স্বাক্ষর করেন। যদি প্রতিষ্ঠানটি উক্ত সময়ের মধ্যে তাদের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কার্যক্রম কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রয় না করে তবে অ্যাপটির ওপর দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম Reuters এর ওয়েবসাইটে ১৬ জানুয়ারি TikTok prepares to shut down app in US on Sunday, sources say শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Reuters

প্রতিবেদনটি থেকেও যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার বিষয়ে একই তথ্য পাওয়া যায়। পাশাপাশি প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, যদি টিকটককে ব্যান করা হয় তাহলে ব্যানের পরবর্তী সময়ে যেসব ব্যবহারকারী অ্যাপটি খোলার চেষ্টা করবেন তারা একটি ‘পপ-আপ’ বার্তা দেখতে পাবেন। যা তাদেরকে টিকটকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তথ্য’সহ একটি ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অ্যাপটি থেকে ব্যবহারকারীদের সব ধরনের ডেটা ডাউনলোড করতে দেওয়ার পরিকল্পনাও করেছে টিকটক। যাতে ব্যক্তিগত তথ্যের রেকর্ড নিজেদের কাছে রাখতে পারেন তারা।

অর্থাৎ, রবিবার থেকে টিকটক বন্ধ সংক্রান্ত পোস্টগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

সুতরাং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইনী জটিলতার কারণে টিকটক বন্ধের বিষয়টিকে বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img