ত্রান দেওয়ার সময় যে শিশুর গলা থেকে মালা বা তাবিজ খোলা হয়েছে সে মুসলিম, হিন্দু নয়

গেল আগস্ট মাসে অতি বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে দেশের বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উক্ত এলাকাসমূহে আটকে পড়া মানুষদের মাঝে বেশকয়েকটি বাহিনীসহ অনেক স্বেচ্ছাসেবী দল ত্রাণ বিতরণ করছে। এরই প্রেক্ষিতে একজন ত্রাণদাতা এক হিন্দু শিশুকে ত্রাণ দিয়েছেন এবং বিনিময়ে তার গলার মালা কেটে ফেলে দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

শিশুর গলা থেকে মালা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এক্স (সাবেক টুইটার) এ এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ত্রাণ দেওয়ার ভাইরাল ভিডিওতে যে শিশুর গলা থেকে মালা বা তাবিজ জাতীয় জিনিস খোলা হয়েছে সে শিশুটি হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয় বরং শিশুটি ইসলাম ধর্মের অনুসারী।

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে তাওহীদ একাডেমি এন্ড ইসলামিক সেন্টার নামক ফেসবুক পেজে গত ২৭ আগস্ট প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে থাকা শিশুর গলা থেকে মালা কাটার দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

তবে উক্ত ভিডিওতে যে শিশুর গলা থেকে মালা বা তাবিজ জাতীয় জিনিস কাটা হয়েছিল, সেই শিশুর কোনো পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

 তবে একই ফেসবুক পেজে গতকাল ২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে, যে শিশুর মালা বা তাবিজ জাতীয় জিনিস কাটা হয়েছিল সেই শিশুর একটি সাক্ষাতকার পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook

উক্ত সাক্ষাতকারে শিশুটি জানায় তার নাম শয়ন (শয়েন)। তার বাবার নাম আব্দুল হক এবং তার মায়ের নাম রোজিনা। তার গ্রামের নাম চর আলগী বাজার। সে দারুন নাজাত মদিনাতুন উলুম মাদ্রাসা ৩য় শ্রেণীতে পড়ে এবং সে একজন মুসলিম অর্থাৎ ইসলাম ধর্মের অনুসারী।

সুতরাং, ইসলাম ধর্মের অনুসারী শিশুর গলা থেকে মালা বা তাবিজ খুলে ফেলার ভিডিও হিন্দু ধর্মের শিশুর গলা থেকে তুলসীর মালা খুলে ফেলার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • তাওহীদ একাডেমি এন্ড ইসলামিক সেন্টার নামক – Facebook Post

হালনাগাদ/ Update

২২ নভেম্বর, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে একই দাবি সম্বলিত ফেসবুক পোস্ট আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে উক্ত পোস্টকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

আরও পড়ুন

spot_img