সম্প্রতি “ইডেনের ঘটনায় ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করলো প্রধানমন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে। ভিডিওগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর ইডেন কলেজের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিটি সত্য নয় বরং প্রধানমন্ত্রীর একটি পুরানো বক্তব্যের খন্ডিত অংশকে আরেকটি ভিডিওয়ের সঙ্গে যুক্ত করে সম্পাদনার মাধ্যমে ইউটিউবে প্রচার করা হচ্ছে।
কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেশের মূলধারার গণমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর “সব নির্দেশ কেনো প্রধানমন্ত্রীকেই দিতে হবে? ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগের কেউ না” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মূল ভিডিও প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।
১০ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের উক্ত ভিডিওটির ৩ মিনিট অংশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরেন।
উক্ত সংবাদে তিনি জানান, বাংলাদেশ আওয়ামী-লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগের “অঙ্গসংগঠন” না। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী “অঙ্গসংগঠন” বলে কিছু নেই, যা আছে তা হল “সহযোগী সংগঠন” এবং “ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন”।
অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র উল্লেখ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগে “অঙ্গসংগঠন” বলে কিছু নেই, যা আছে তা হল “সহযোগী সংগঠন” এবং “ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন”।
অপরদিকে অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন হিসেবে বলা হয়েছে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের কেউ না, এমন কোনো মন্তব্য করেননি।
পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে ইডেন কলেজে ঘটে যাওয়া ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি একটি টকশো’র আয়োজন করে। সেই টকশো’র একটি খন্ডিত অংশের সঙ্গে ২০১৯ সালে ছাত্রলীগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের খন্ডিত অংশ যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউবে ইডেনের ঘটনায় ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রী নিষিদ্ধ করেছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে সিট বাণিজ্য, অন্য নেত্রীদের হেনস্তার অভিযোগ তুলে ব্যবস্থার নেওয়ার দাবি জানিয়ে ২৫ নেত্রী সংবাদ সম্মেলন করেন দুপুরে। এরপর অভিযুক্তরা বিকালে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়। এসময় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে কলেজ ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপের ১২ জন নেত্রী এবং চারজন কর্মীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সুতরাং, রাজধানীর ইডেন কলেজের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিটি সত্য নয়; এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।