সম্প্রতি পাকিস্তানের মিসাইল হামলায় ভারতের একটি স্থানে ধ্বংসের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া উঠছে, পাশে সামরিক বাহিনীর একটি গাড়ি থেকে সদস্যরা নামছেন, এবং আশপাশে কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে তা দেখছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি পাকিস্তানের মিসাইল হামলায় ভারতের কোনো স্থান ধ্বংসের দৃশ্য নয় বরং, এটি নেপালের একটি ভিডিও।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Ali Imran Abbasi’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে গত ৭ মে একই দাবিতে প্রচারিত একটি পোস্টে ভিডিওটির দীর্ঘ সংস্করণ পাওয়া যায়। ওই পোস্টের মন্তব্যে ‘Bipan Khanal’ নামের একজন লিখেছেন, “আমি নিশ্চিত করতে চাই এই ভিডিওটি নেপালের। কিছুদিন আগে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।”
ভিডিওটির দীর্ঘ সংস্করণ বিশ্লেষণে একটি ফ্রেমে মোটরসাইকেলের বিজ্ঞাপন দেখা যায়, যেখানে ইংরেজিতে লেখা ‘Nepal’s Highest Selling Motorcycle’।

আরেক ফ্রেমে ‘বার্গার স্টেশন’ নামের একটি দোকান এবং পাশে ‘মাইলস্টোন ইন্টারন্যাশনাল কলেজ’ লেখা সাইনবোর্ড দেখা যায়। গুগল ম্যাপে অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়, এই স্থাপনাগুলো নেপালের কাঠমাণ্ডুর ললিতপুর এলাকার শহীদ শুক্ররাজ মার্গে অবস্থিত।

উক্ত স্থাপনার নিকটবর্তী বালকুমারি ব্রিজ ও ললিতপুর এলাকার নাম ধরে আরও অনুসন্ধানে, গত ২৮ মার্চ সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত ওই এলাকার কিছু ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায়। এই ছবি ও ভিডিওগুলোতে দাবিকৃত ভিডিওর মতো পরিস্থিতি দেখা যায়।
গত ৫ এপ্রিল নেপাল নিউজের ওয়েবসাইতে প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ নেপালের কাঠমাণ্ডুতে রাজতন্ত্র পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভে রাজতন্ত্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো ২০০৮ সালে বিলুপ্ত রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবি জানায়। বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই ঘটনায় অন্তত ২ জন নিহত ও ১২০ জনের বেশি আহত হয়।
সুতরাং, নেপালের একটি ভিডিওকে পাকিস্তানের মিসাইল হামলায় ভারতের একটি স্থানে ধ্বংসের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s analysis.
- Google Maps.
- Nepal News: What we know so far about the March 28 chaos in Kathmandu: protests, security failures, accountability and the fallout