সম্প্রতি একটি ক্ষতিগ্রস্ত ফায়ার স্টেশনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভবনের নিচতলার কলাম ভেঙে পড়ায় নিচে থাকা কয়েকটি ফায়ার ট্রাক চাপা পড়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে অনেকেই শিরোনামে লিখেছেন, ‘ঠিকাদার বলছে, সবাইকে দিতে গিয়েই শেষ। আজই একটি সরকারি ভবন দেখে ভাবছিলাম সত্যি হয়ে গেল।’ তবে এতে কোনো দেশের নাম উল্লেখ না থাকায় অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী মনে করছেন ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেছে এবং সে অনুযায়ী মন্তব্যও করছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ক্ষতিগ্রস্ত ফায়ার স্টেশনের নয়। বরং, এটি গত মার্চে মিয়ানমারের সাগাইংয়ে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ফায়ার স্টেশনের ভিডিও।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ১২ এপ্রিল মিয়ানমারের একটি ফেসবুক পেজে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

এর পাশাপাশি, মিয়ানমার ভিত্তিক ‘Ngao Leng Mun Mai’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৩১ মার্চ প্রকাশিত এক পোস্টে থাকা ছবির সঙ্গেও ভিডিওটির দৃশ্যগত মিল দেখা যায়। পোস্টটির বার্মিজ ভাষার ক্যাপশন অনুযায়ী, এটি ভূমিকম্পে ধসে পড়া সাগাইং ফায়ার স্টেশনের ছবি।
এছাড়াও, গত ২৯ মার্চ যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এবং ১ এপ্রিল ভারতের ইংরেজি দৈনিক ডেকান হেরাল্ডে মিয়ানমারের সাগাইংয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি ফায়ার স্টেশনের ছবি প্রকাশিত হয়। এই ছবিগুলোর সঙ্গেও আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। দেশটির সংবাদমাধ্যম মিজিমা-তে ৯ এপ্রিল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫,৩৫২ জনে। আহত হয়েছেন ৭,১০৮ জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন ৫৩৮ জন।
সুতরাং, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারের একটি ফায়ার স্টেশনের ভিডিওকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- ခန္႔ေက်ာ္ ေက်ာက္စိမ္းေရာင္းဝယ္ေရး: Facebook Video
- Ngao Leng Mun Mai: Facebook Post
- BBC: Myanmar quake toll passes 1,600 as people dig for survivors with bare hands
- Deccan Herald: US aid response in Myanmar faces hurdles after staff cuts