গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ জবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবরে যুগান্তরে ভুল ছবি প্রচার

সম্প্রতি, ঢাকার ধূপখোলাবাজারে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একটি ছবি প্রচারিত হয়েছে।

দৈনিক যুগান্তর প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেখুন যুগান্তর। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পুরান  ঢাকার ধূপখোলা বাজারে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের মৃত্যু নিয়ে যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবিটি মেহেদী হাসানের নয় বরং এটি গত ২৯ এপ্রিল মারা যাওয়া একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাজু আহমেদের ছবি।

দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে মেহেদী হাসানের দাবিতে প্রচারিত ছবিটির মূল উৎস খুঁজে পাওয়া যায়। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, যে ছবিটিকে মেহেদী হাসানের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, সেটি মূলত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইংরেজি বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজু আহম্মেদের। 

image collage: Rumor Scanner 

অপরদিকে অনুসন্ধানে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মৃত শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Mahedi Hasan Shawon Facebook Profile 

অ্যাকাউন্টটির বিভিন্ন পোস্ট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনিই গত ৬ মে (শনিবার) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ এপ্রিল গ্রামের বাড়ী পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় ফিরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজু আহম্মেদ। পরবর্তীতে তার সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় তার পিতা অভিযোগ করেন, রাজুকে বিষক্রিয়ার মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে।

Screenshot: Dainik Mukti

অর্থাৎ গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মৃত শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান এর ছবি দাবিতে যে ছবিটি প্রচার করা হয়েছে, সেটি রাজু আহম্মেদ নামে বিশ্ববিদ্যালয়টির আরেক শিক্ষার্থীর, যার গত ২৯ এপ্রিল অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।

মূলত, গত পহেলা মে রাজধানীর পুরান ঢাকার ধুপখোলা বাজারে গ্যাস লাইন মেরামতের সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে জবি শিক্ষার্থী শাওনসহ ৮ জন দগ্ধ হন। পরবর্তীতে গত ৬ মে সকালে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তবে মেহেদীর মৃত্যুর ঘটনায় দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি মেহেদী হাসানের নয়। প্রকৃতপক্ষে ছবিটি গত ২৯ এপ্রিল মারা যাওয়া জবির ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী রাজু আহম্মেদের।

উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন ঘটনায় গণমাধ্যমে ভুল ছবি প্রকাশ করা হলে বিষয়গুলো শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, গত ২৯ মারা যাওয়া জবি শিক্ষার্থী রাজু আহম্মেদের ছবিকে আজ ০৬ মে মারা যাওয়া জবি শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানের ছবি দাবি করে দৈনিক যুগান্তরে প্রচারিত হয়; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img