আন্দোলনকারীদের হাতে হেনস্তার শিকার হয়ে নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগের দাবিটি মিথ্যা

সম্প্রতি, ভারতের নয়াদিল্লিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মারধরের শিকার হয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পদত্যাগ করেছেন দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের আদলে তৈরি একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত প্রতিবেদনটি একটি সংবাদ বুলেটিনের অংশ যেখানে বলা হয়, আন্দোলনকারীদের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার পর তিনি গণমাধ্যমের সামনে পদত্যাগ করার বিষয়টি জানিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। যা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগের দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সত্য নয়। এছাড়াও নেপালের আন্দোলনের পর ভারতের নয়াদিল্লিতে সাম্প্রতিক সময়ে বড় কোনো আন্দোলনের তথ্য পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের দ্বারা নরেন্দ্র মোদির হেনস্তার শিকার হওয়ার দাবিটিরও সত্যতা মেলেনি। প্রকৃতপক্ষে, কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়া সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে এমন কোনো আন্দোলনের তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিহার রাজ্যের রাজধানী পাটনায় চতুর্থ দফা শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (টিআরই-৪) নিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনের তথ্য পাওয়া যায়। তবে সেখানে নরেন্দ্র মোদিকে হেনস্তার কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

আলোচিত ভিডিওটিতে দাবি করা হয় নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগের ঘটনাটি ভারতীয় গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে ভারতীয় কোনো গণমাধ্যমেই এমন কোনো ভিডিও পাওয়া যায়নি। এমনকি নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগ করার বিষয়েও দেশটির কোনো গণমাধ্যম বা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, আজ অর্থাৎ, ২১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫ টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি ২.০ আউটরিচ প্রোগ্রামে ভাষণ দিবেন। এছাড়াও নরেন্দ্র মোদির ইউটিউব চ্যানেল থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদির পদত্যাগের দাবিটি সত্য নয়। 

এছাড়াও আলোচিত ভিডিওর থাম্বনেইলে নরেন্দ্র মোদিকে মারধরের ছবি দাবিতে ব্যবহৃত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ছবিটি মূলত গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে মারধরের ছবি। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ছবিটিতে নুরের চেহারার স্থলে মোদির চেহারা যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner 

সুতরাং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পদত্যাগ করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img