সকল গ্রেডের সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কার করে কোটা ব্যবস্থার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা গত পহেলা জুলাই থেকে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে গত ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়েও কথা বলেন। সে সময় প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হন। এর প্রেক্ষিতে আন্দোলনের কর্মসূচিতে রাস্তায় নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে আন্দোলনের কর্মসূচিতে রাস্তায় নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ঘটেছে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা, এসেছে বহু হতাহতের খবরও।
এসবের মাঝে গত ১৬ জুলাই থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দাবি করা হয়, ঢাকা আরামবাগের ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মারা গেলেন।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকার মতিঝিল থানার অধীনে আরামবাগ ইউনিট ছাত্রলীগের কমিটি দুই সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি। কমিটিতে কোনো সহ সভাপতির পদই নেই। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে আরামবাগে কোনো ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু হয়নি।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে অনুসন্ধানে গত ২৮ জানুয়ারি আরামবাগ ইউনিট ছাত্রলীগের আংশিক কমিটির একটি তালিকা খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত তালিকা থেকে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি মতিঝিল থানার ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ শরিফুল ইসলাম সেন্টু এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল ইসলাম দ্বীপ স্বাক্ষরিত দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মোঃ জীবন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মোঃ স্বাধীন। অনুসন্ধানে এর পরবর্তীতে কমিটি বর্ধিতের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য মতিঝিল থানার ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল ইসলাম দ্বীপের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, প্রচারিত দাবিটি ভুল। আরামবাগ ইউনিটে এখনো দুই সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি রয়েছে।
অর্থাৎ, আরামবাগ ইউনিট ছাত্রলীগের দুই সদস্যবিশিষ্ট (সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক)। উক্ত ইউনিটে বর্তমানে সহ সভাপতি পদে কেউ দায়িত্বে নেই।
মূলত, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দাবি প্রচার করা হয়, ঢাকা আরামবাগের ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মারা গেছেন। কিন্তু, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকার মতিঝিল থানার আরামবাগ ইউনিট ছাত্রলীগের কমিটি দুই সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি। কমিটিতে সভাপতি পদে আছেন মোঃ জীবন এবং সাধারন সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন মোঃ স্বাধীন। উক্ত কমিটিতে কোনো সহ সভাপতি নেই। তাছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন কিংবা অন্য কোনো কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার আরামবাগ ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মীর মৃত্যু খবর গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, বিষয়টি ভুল বলে নিশ্চিত করেছেন মতিঝিল থানার ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল ইসলাম দ্বীপ।
সুতরাং, ঢাকার আরামবাগ ইউনিট ছাত্রলীগের সহ সভাপতির মৃত্যু হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Arambagh Unite Committee Pade
- Md. Rezaul Islam Dip- Statement
- Rumor Scanner’s Own Analysis
