প্রথম পিরিয়ডে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু নয়, প্রচারিত ছবির মেয়েটি আত্মহত্যা করেছিল

সম্প্রতি, “প্রথম পিরিয়ডেই হারিয়ে গেল একটি জীবন — কে নেবে এই দায়?” শীর্ষক ক্যাপশন সম্বলিত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবির মেয়েটি প্রথম পিরিয়ডে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মারা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২০ সালে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ঝুমা আক্তার নামের এক ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে থাকা ছবিটি রিভার্স সার্চের মাধ্যমে আলোকিত প্রজন্ম নামক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর “শাড়ী পরতে না পারায় ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রীর আত্মহত্যা” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Image Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, “২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে ঝুমা তার নানা আ. ছালামের বাড়ী থেকে নিজ বাড়িতে আসে। ঝুমা তার মার কাছে পড়ার জন্য একটি শাড়ি চায়। মা তাকে শাড়ি দিতে অপরগতা প্রকাশ করে। ঝুমা তার মার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাগ অভিমান করে নিজের রুমে চলে যায়। পরে মেয়ের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঝুমার রুমে চলে এসে মেয়েকে ঝুলান্ত অবস্থায় দেখতে পায় মা।” 

পাশাপাশি, খবর বাংলা নামক আরেকটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর  প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একই ছবিটি  পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনেও আলোচিত ছবির বিষয়ে একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, ছবির মেয়েটির মৃত্যুর কারণ প্রথম পিরিয়ডে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ সংক্রান্ত কোনো ঘটনা নয়।

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে গত ২৫ জুন মুলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজের ওয়েবসাইটে “প্রথম পিরিয়ডেই হারিয়ে গেলো একটি জীবন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ‘খালিদ বিন মোজাহিদ’ নামক এক ব্যক্তির নাম উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয় এবং প্রতিবেদনের লিখনির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকার পোস্টের ক্যাপশন হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তবে, প্রতিবেদনে আলোচিত দাবিতে থাকা ছবিটির কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। জাগোনিউজ তাদের প্রতিবেদনের সূত্র হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া উল্লেখ করেছে। তবে তথ্যটির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

সুতরাং, “প্রথম পিরিয়ডেই হারিয়ে গেল একটি জীবন — কে নেবে এই দায়?” শিরোনামে পুরোনো ও অপ্রাসঙ্গিক ছবি ব্যবহার করে একটি একটি তথ্য  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img