হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোর দাবিটি সঠিক নয়

সম্প্রতি, একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে জুতার মালা পরিয়ে তিরস্কার করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে ৪০ বছর শিক্ষকতা করা এক হিন্দু শিক্ষককে ইসলামপন্থীরা লাঞ্ছিত করেছে।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটিতে দেখা যাওয়া ব্যক্তি বাংলাদেশে ৪০ বছর শিক্ষকতা করা কোনো হিন্দু শিক্ষক নন। প্রকৃতপক্ষে, তিনি আহম্মদ আলী নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। তিনি একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ১৫ জুন কালের কণ্ঠে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল লক্ষ্য করা যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, সেদিন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তির অভিযোগে এক চিকিৎসককে গণপিটুনির পর জুতার মালা পরিয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করান স্থানীয়রা। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আহম্মদ আলী।

Comparison: Rumor Scanner.

ঢাকা টাইমসের আরেক প্রতিবেদনে বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জামাল উদ্দিনের বরাতে জানানো হয়, বেরুলী বাজারে একটি চায়ের দোকানে মহানবী (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে আহম্মদ আলীকে দুপুরে আটক করে উত্তেজিত জনতা গণপিটুনি দেয়।

বিডিনিউজ২৪-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আহম্মদ আলী নবাবপুর ইউনিয়নের তেকাটি গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয় ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবসরপ্রাপ্ত কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার।

উল্লিখিত প্রতিবেদনগুলোতে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আলোচিত ব্যক্তি শিক্ষক নন এবং তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বীও নন। বরং, তার নামের বানান অনুযায়ী এটা নিশ্চিত যে তিনি একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী।

সুতরাং, হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অবমাননার অভিযোগে আহম্মদ আলী নামের এক মুসলিম ধর্মাবলম্বী অবসরপ্রাপ্ত কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে জুতার মালা পরানোর ভিডিওকে বাংলাদেশে এক হিন্দু শিক্ষককে চরমপন্থীদের দ্বারা লাঞ্ছনার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img