গত ০৪ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সহসভাপতি ফারুক হাসানসহ জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের বেশ কয়েকজন আহত হন। এ হামলার নেপথ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। হামলার প্রতিবাদে ০৫ জানুয়ারি গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘ফারুকের উপর হামলার দায়ে সারজিস আলমের নামে মামলা দিলো নুরুল হক নূর’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফারুক হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি নুরুল হক নুর কর্তৃক সারজিস আলমের নামে মামলা দায়েরের কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং, উক্ত হামলার ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশে নুরুল হক নুরের দেওয়া একটি বক্তব্যকে কৌশলে বিকৃত করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ‘ফারুকের উপর হামলা: সারজিসের অবস্থান পরিষ্কার করতে বললেন নুর’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
নুরুল হক নুরের বক্তব্যের উক্ত ভিডিওটির ০২:২৫ সেকেন্ড থেকে ০৩:২২ সেকেন্ড পর্যন্ত শহিদ মিনারে ফারুক হাসানসহ অন্যান্য আহতদের উপর হামলার ঘটনায় সারজিস আলমের সম্পৃক্ততার অভিযোগ নিয়ে কথা বলা হয়েছে৷ এসময় তিনি হামলার নেপথ্যে থাকার অভিযোগে বারবার সারজিস আলমের নাম আসার বিষয়ে তাকে তার অবস্থান পরিষ্কার করতে আহ্বান জানান৷ পুনরায়, ভিডিওটির ০৫:৩১ সেকেন্ড থেকে ০৬:৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত সময়ে হামলায় সারজিসের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ ও বিদেশি শক্তির সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা নিয়ে কথা বলা হয় এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে জড়িতদের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়৷ উক্ত বক্তব্যে সারজিস আলমের নামে মামলা করার বিষয়ে কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া হয়নি৷

আলোচিত ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়ে জানা যায়, হামলার শিকার ফারুক হাসান নিজে বাদী হয়ে গত ০৫ জানুয়ারি শাহবাগ থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। এতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের চারজন কর্মীসহ অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে নাম থাকা চারজনের মধ্যে হিল্লোল ও শরীফ নামের দুইজন আহত শিক্ষার্থীকে ০৫ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট থেকে গ্রেফতার করা হয়। তবে গ্রেফতারের ১০ ঘন্টার মধ্যেই তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়৷
উক্ত মামলার এজহারে সারজিস আলমের নাম নেই বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ খালিদ মনসুর।
সুতরাং, ফারুক হাসানের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ে সারজিস আলমের নামে নুরুল হক নুরের মামলার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা৷
তথ্যসূত্র
- Jamuna TV – ফারুকের উপর হামলা: সারজিসের অবস্থান পরিষ্কার করতে বললেন নুর
- বাংলা ট্রিবিউন – গণঅধিকারের ফারুকের ওপর হামলা: ২ আসামির জামিন
- যুগান্তর – আমি হাসপাতালে কাতরাচ্ছি, আর তারা জামিন পেয়ে গেল?: ফারুক হাসান
- bdnews24 – গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্রের উপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
- Statement of Officer In Charge, Shahbagh Police Station