সম্প্রতি, ‘আমার ছেলে গুলি খেয়ে মরেনি, স্ট্রোক করে মরেছে’—এমন বক্তব্যসহ একটি ভিডিও ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে, এটি গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের মায়ের বক্তব্য।

এই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে।
ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে।
ইউটিউবে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত বক্তব্যটি আবু সাঈদের মায়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মারা যাওয়া রিকশা চালক জামালউদ্দিনের মা শাহিদা বেগমের বক্তব্যকে আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগমের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
দাবিটির বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে এতে কালের কণ্ঠের বুম (মাইক্রোফোনযুক্ত দণ্ড) দেখা যায়। সেই সূত্র ধরে কালের কণ্ঠের অফিসিয়াল ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে অনুসন্ধান করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ না নিয়েও শ/হী/দদের তালিকায় নাম!’ শিরোনামের একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনের ৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড থেকে ৪ মিনিট পর্যন্ত অংশের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্য ও বক্তব্যের মিল পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গত বছরের ১৯ জুলাই রিকশা চালানোর সময় অসুস্থ হয়ে মারা যান ভোলার বোরহানউদ্দিনের জামালউদ্দিন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের তালিকা’-তে তার নাম যুক্ত হয় এবং স্বজনরা সরকারি ও রাজনৈতিকভাবে আর্থিক সহায়তাও পান। তবে পরিবারের দাবি, জামালউদ্দিন কোনো আন্দোলনে অংশ নেননি, বরং রিকশা চালানোর সময় স্ট্রোক করে মারা যান। প্রতিবেদনে জামালের স্ত্রী, মেয়ে ও মা সাহিদা বেগমকে এমন বক্তব্য করতে দেখা যায়।
কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনে জামালের মায়ের এই বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ ব্যবহার করেই ‘আবু সাঈদের মায়ের বক্তব্য’ দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
গণমাধ্যম সূত্রে (১ ,২, ৩) জানা যায়, আবু সাঈদের মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। গণমাধ্যমে প্রকাশিত মনোয়ারা বেগমের ছবির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর নারীর চেহারার তুলনা করলে স্পষ্ট পার্থক্য দেখা যায়।

সুতরাং, ভিন্ন এক নারীর বক্তব্যকে আবু সাঈদের মায়ের বক্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Kaler Kantho: Facebook Post
- Somoy Tv: ছেলের জন্য দোয়া চাইলেন শহীদ আবু সাঈদের মা