গত ১৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরই প্রেক্ষিতে “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য জুবায়েরকে গলা কেটে হত্যা করছে শিবির ক্যাডাররা।” শীর্ষক দাবিতে কালের কণ্ঠের আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্টগুলো দেখুন এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেনের মৃত্যু নিয়ে কালের কন্ঠ এরকম কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং এ ঘটনায় গণমাধ্যমটি ভিন্ন ফরমেটে “জবি ছাত্রদল নেতা খু/ন!” শিরোনামে একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের লোগো এবং প্রকাশের তারিখ ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি দেশের অন্য গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি।
এছাড়া, পর্যবেক্ষণে আলোচিত দাবির ফটোকার্ডের ফন্টের সাথে কালের কণ্ঠের প্রচলিত ফটোকার্ডের ফন্টের পার্থক্য লক্ষ করা যায়।
অনুসন্ধানে কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে ১৯ অক্টোবর এই ঘটনা পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়, যার শিরোনাম ছিল, “জবি ছাত্রদল নেতা খু/ন!” এই ফটোকার্ডে থাকা ছবি এবং শিরোনামের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনাম এবং ছবিতে স্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান।
তাছাড়া, গণমাধ্যম সূত্রে নিহত হওয়া ছাত্রদলের নেতার নাম জোবায়েদ হোসেন বলে জানা গেলেও কথিত ফটোকার্ডটিতে তার নাম জুবায়ের লেখা হয়েছে।
অর্থাৎ, কালের কণ্ঠের ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এদিকে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, প্রেমের কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাতে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অর্থাৎ, এই ঘটনার সাথে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য জুবায়েরকে গলা কেটে হত্যা করছে শিবির ক্যাডাররা” শিরোনামে কালের কণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s own analysis
