গত ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবারে জুমার নামাজ শুরুর আগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের বর্তমান খতিব হাফেজ মাওলানা ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বয়ান করার সময় মসজিদটির পূর্বের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন অনুসারীদের নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে এসে খতিবের মাইক্রোফোনে হাত দেন। তখন রুহুল আমিনের অনুসারীদের ওয়ালিয়ুর রহমান খানের অনুসারীরা প্রতিরোধ করেন। পরবর্তীতে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। উক্ত ঘটনার পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব মুফতি মো. রুহুল আমিনকে অপসারণ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরই প্রেক্ষিতে, “আল্লাহর কারামত! মানুষ অনেক জুতা মারছে কিন্তু একটা জুতাও আমার গায়ে লাগে নি। বায়তুল মুকাররমের খতিব মুফতি রুহুল আমিন” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
পাশাপাশি, “আমাকে লক্ষ করে অনেকে জুতা মেরেছিলে, কিন্তু আমার গায়ে একটাও লাগেনি। পলাতক খতিব রুহুল আমিন।” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে আ ফ ম খালিদ হোসেনের নামে জাতীয় দৈনিক কালবেলার ডিজাইন সম্বলিত আরেকটিফটোকার্ডও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
দৈনিক কালবেলার ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, “আল্লাহর কারামত! মানুষ অনেক জুতা মারছে কিন্তু একটা জুতাও আমার গায়ে লাগে নি। বায়তুল মুকাররমের খতিব মুফতি রুহুল আমিন” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে যমুনা টেলিভিশন এবং “আমাকে লক্ষ করে অনেকে জুতা মেরেছিলে, কিন্তু আমার গায়ে একটাও লাগেনি। পলাতক খতিব রুহুল আমিন।” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে দৈনিক কালবেলা কোন ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। মুফতি রুহুল আমীনও এমন কোনো মন্তব্য করেননি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে যমুনা টেলিভিশন এবং দৈনিক কালবেলার ডিজাইন সম্বলিত আলোচিত ভুয়া ফটোকার্ড দুটি তৈরি করা হয়েছে।
যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ড যাচাই:
অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে অনুসন্ধানে ২৬ আগস্ট তারিখে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলেও এমন কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে যমুনা টেলিভিশন কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডের শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের পার্থক্য রয়েছে। পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।
দৈনিক কালবেলার ফটোকার্ড যাচাই:
আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে ফটোকার্ডটিতে এগুলো প্রকাশের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে অনুসন্ধানে ২২ সেপ্টেম্বর তারিখে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। কালবেলার ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলেও এমন কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে কালবেলা কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডের পার্থক্যও রয়েছে। পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, বায়তুল মুকাররমের সাবেক খতিব মুফতি রুহুল আমিন এর মন্তব্য দাবিতে যমুনা টেলিভিশন এবং দৈনিক কালবেলার নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ডগুলো ভুয়া ও বানোয়াট।