ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে গঠিত বিশেষ কমিটি ইতোমধ্যে নানা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্য নামের একটি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ড দাবিতে একটি ফটোকার্ড প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “জাতির উদ্দেশ্যে যে বার্তা দিলেন সাত কলেজের সমন্বয়ক”। উক্ত ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছে, সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের মুখপাত্র আব্দুর রহমান বলেছেন, “কলেজে ভর্তি হয়ে আজ আমরা কলেজকেই বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়ে ফেলেছি। এখন আমরা পাবলিকিয়ান। এখন থেকে সবাই আমাদেরকে সম্মান দিয়ে কথা বলবেন।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের মুখপাত্র আব্দুর রহমান বলেছেন, “কলেজে ভর্তি হয়ে আজ আমরা কলেজকেই বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়ে ফেলেছি। এখন আমরা পাবলিকিয়ান। এখন থেকে সবাই আমাদেরকে সম্মান দিয়ে কথা বলবেন।” শীর্ষক দাবিতে সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্য ফেসবুক পেজটি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি এবং আব্দুর রহমানও এরূপ কোনো মন্তব্য করেননি বরং, সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্য কর্তৃক প্রকাশিত ভিন্ন শিরোনামের একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্য শীর্ষক ফেসবুক পেজের নামের উল্লেখ করা হয়েছে, যারা সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির দাবিতে কাজ করে। উক্ত ফেসবুক পেজটির গত ১ মাসে প্রচারিত প্রতিটি ফটোকার্ড পর্যবেক্ষণ করলেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে অনুসন্ধানে গত ০১ মার্চে সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যের ফেসবুক পেজে “আজও বড় আকারে চিঠি লিখলাম, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই অন্তবর্তী প্রশাসনের ঘোষণা আসে। ইনশাআল্লাহ আশাবাদী।” শীর্ষক শিরোনামে উল্লিখিত আব্দুর রহমানের বক্তব্য সম্পর্কে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন, বক্তার নামের ফন্ট এবং ছবির মিল রয়েছে। কিন্তু এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পাদনা করে “আজও বড় আকারে চিঠি লিখলাম, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই অন্তবর্তী প্রশাসনের ঘোষণা আসে। ইনশাআল্লাহ আশাবাদী।” বাক্যগুলো পরিবর্তন করে “কলেজে ভর্তি হয়ে আজ আমরা কলেজকেই বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়ে ফেলেছি। এখন আমরা পাবলিকিয়ান। এখন থেকে সবাই আমাদেরকে সম্মান দিয়ে কথা বলবেন” করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যের ফেসবুক পেজে প্রচারিত গত ৫ মার্চের একটি পোস্টেও জানানো হয়, আলোচিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তাছাড়া, সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের মুখপাত্র আব্দুর রহমান তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১২ মার্চে একটি পোস্টের মাধ্যমে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত নিশ্চিত করে জানান, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার নাম ছবি ব্যবহার করে এসব ছাড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলা হলো। এ ধরনের হাবিজাবি লেখা আমি কখনোই লিখি না, শেয়ারও করি না। কেউ বিভ্রান্তি ছড়ালে আমার কাছে তথ্য জেনে মন্তব্য করার অনুরোধ।”
সুতরাং, “সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের মুখপাত্র আব্দুর রহমান বলেছেন, “কলেজে ভর্তি হয়ে আজ আমরা কলেজকেই বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়ে ফেলেছি। এখন আমরা পাবলিকিয়ান। এখন থেকে সবাই আমাদেরকে সম্মান দিয়ে কথা বলবেন।” শীর্ষক শিরোনামে সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যের প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত এবং আব্দুর রহমানের এরূপ মন্তব্য করার দাবিটি মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্য – Facebook Post
- সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্য – Facebook Post
- Abdur Rahman – Facebook Post