অন্তত গতকাল (২৪ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাত থেকে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “যমুনা চারপাশে সেনা সদস্যরা ঘিরে ফেলেছে ৫০০ উপর সেনাবাহিনী ঘিরে ফেলেছে | সেনাপ্রধান যমুনায় প্রবেশ করেছে। ইউনূস কে ২৫ কে মিনিট টাইম দিয়েছে। | পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ুক সেফ এক্সিট দেবে।সই না দিলে গ্রেফতার করবে। খেলা শেষ সম্মনয়ক রাজাকার দের”।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যমুনার চারপাশ ঘিরে ইউনূসকে পদত্যাগের সময় বেঁধে দিয়েছে সেনাবাহিনী শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়। তাছাড়া, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোও গত রাতের কিংবা আলোচিত প্রসঙ্গের নয় বরং, একটি অন্তত ১৮ দিন পুরোনো এবং অপরটি প্রায় পাঁচ বছর পুরোনো এবং ভিন্ন প্রসঙ্গের ছবি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে এরকম কোনোকিছু ঘটে থাকলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার হতো।
পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত দাবিতে সংযুক্ত প্রথম ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে গত ০৬ মার্চে “রাজধানীজুড়ে পুলিশের ৬৬৭ টহল টিম, ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১৮৭” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে কয়েকটি ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায়, যার মধ্যে একটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ঢাকা মহানগর এলাকায় জোরদার করা হয়েছে পুলিশি কার্যক্রম। ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৫০টি থানা এলাকায় ৬৬৭টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করেছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৭১টি পুলিশি চেকপোস্টসহ সিটিটিসি, এটিইউ, এপিবিএন, এবং র্যাবের টহল টিম দায়িত্ব পালন করেছে।…” অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটির প্রেক্ষাপটের সাথে আলোচিত দাবিটির কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, প্রচারিত দাবিটিতে সংযুক্ত দ্বিতীয় ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘আমাদের প্রতিদিন’ নামক যুক্তরাজ্য ভিত্তিক বাংলাভাষী একটি সংবাদমাধ্যমে “গোলাপগঞ্জে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবিটির সাথে আলোচিত ছবিটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “করোনাভাইরাস ঠেকাতে মানুষকে ঘরমুখি করতে ইতোমধ্যে সারাদেশে প্রশাসনের সাথে সহযোগিতায় নেমেছে সেনাবাহিনী। সারাদেশের ন্যায় সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।”
অর্থাৎ, প্রচারিত দ্বিতীয় ছবিটিও অন্তত পাঁচ বছরের পুরোনো এবং আলোচিত দাবিটির সাথেও উক্ত ছবির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
সুতরাং, পুরোনো ও ভিন্ন প্রসঙ্গের ছবি সংযুক্ত করে যমুনার চারপাশ ঘিরে গতরাতে (২৪ মার্চ) ইউনূসকে পদত্যাগের সময় বেঁধে দিয়েছে সেনাবাহিনী শীর্ষক দাবি প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Jagonews24 – রাজধানীজুড়ে পুলিশের ৬৬৭ টহল টিম, ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১৮৭
- Amader Pratidin – গোলাপগঞ্জে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী!