সংগীতশিল্পী জেমসের মৃত্যুর গুজব

অন্তত গত ১১ নভেম্বর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি কবরস্থানের ছবিসহ একটি ফটোকার্ড প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “আর দেখা যাবে না সংগীতশিল্পী জেমসকে, কবর দেওয়া হলো যেখানে”। পাশাপাশি উক্ত দাবিতে প্রচারিত একাধিক পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন সংগীতশিল্পী জেমস।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংগীতশিল্পী মাহফুজ আনাম জেমস মারা যাননি। প্রকৃতপক্ষে, কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। এমনকি জেমসের মারা যাওয়ার দাবিটি প্রচারের পরও তাকে মঞ্চে গান গাইতে দেখা গেছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জেমসের মারা যাওয়ার দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং, মূলধারার সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে “বারবার সৌদির রিয়াদে যেতে চান জেমস” শিরোনামে গতকাল ২৪ নভেম্বরে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সৌদি সরকারের আমন্ত্রণে প্রথমবার রিয়াদে গেছেন জেমস। গত ২২ নভেম্বর রিয়াদে গান শোনান তিনি। আয়োজনটির নাম রাখা হয়েছে ‘বাংলাদেশ কালচার’, এটি সৌদি সরকারের আয়োজন রিয়াদ সিজনের অংশ। 

এছাড়াও, সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, অনুষ্ঠান শেষে জেমস বলেন, ‘সৌদি আরবের মাটিতে প্রথম পা দিলাম। আমি আশা করিনি, এত সুন্দর আয়োজন হবে এবং এত মানুষ, এত দর্শক এখানে আছে। আমি মুগ্ধ রিয়াদে এসে। আমার অনুভূতি ঠিক ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। অদ্ভুত সুন্দর। রিয়াদে আমি বারবার আসব, ইনশা আল্লাহ।’

উল্লেখ্য যে, জেমসের মারা যাওয়ার দাবিটি অন্তত গত ১১ নভেম্বর থেকে প্রচার হয়ে আসছে যার পরবর্তী সময়ে গত ২২ নভেম্বরে সৌদি আরবে কনসার্টে জেমস অংশ নিয়েছেন। 

কনসার্টটিতে জেমসের অংশ নেওয়ার বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম চ্যানেল আই, মানবজমিনসহ আরো একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রেও নিশ্চিত হওয়া যায়।

জেমসের কবর দাবিতে প্রচারিত ছবিটির বিষয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে অনুসন্ধান করলে আমার সংবাদদৈনিক সবুজ নামের দুইটি ওয়েবসাইটে যথাক্রমে ২০২২ সালের ২৪ ও ২৫ জানুয়ারিতে প্রচারিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। “কবর খুঁড়লেই মিলছে পানি, লাশ দাফনে ভোগান্তি” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনগুলোতে উক্ত ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পৌর কবরস্থানে কবর খুঁড়লেই মিলছে পানি। একটি লাশের জন্য কমপক্ষে ২ থেকে ৪টি কবর খুঁড়ে নির্ধারণ করতে হয় ১টি। গত ৩/৪ বছর ধরে লাশ দাফনে সমস্যা হচ্ছে। তবে, সংযুক্ত কবরের ছবিটি উক্ত সংবাদের সাথে সম্পর্কিত কি না সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।

সুতরাং, রকস্টার মাহফুজ আনাম জেমস মারা গিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img