১৪ ফেব্রুয়ারি নিয়ে সেনাবাহিনীর মাইকিং দাবিতে সম্পাদিত ভিডিও প্রচার

আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভ্যালেন্টাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবস। সম্প্রতি এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সামনে হ্যান্ডমাইক হাতে একজন সেনা সদস্য ঘোষণা করছেন, “আসিতেছে ১৪-ই ফেব্রুয়ারি। এইদিনে অবিবাহিত কোনো ছেলে-মেয়েকে একসাথে পাওয়া গেলে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পানিতে চুবিয়ে রাখার আদেশ করা হইলো।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

সেনাবাহিনীর মাইকিং

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত উক্ত টিকটক ভিডিওটি ১ কোটি ২১ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৫ লক্ষ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে লাইক দেওয়া হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৪-ই ফেব্রুয়ারিতে অবিবাহিত কোনো ছেলে-মেয়েকে একসাথে পাওয়া গেলে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পানিতে চুবিয়ে রাখার কোনো আদেশ সেনাবাহিনী বা সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, করোনাকালীন সময়ে সেনাসদস্যের মাইকিংয়ের ভিন্ন ঘটনার দৃশ্যতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত অডিওটি সংযুক্ত করে এই ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য বা প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির ব্যাপারে অনুসন্ধান করলে মূলধারার গণমাধ্যম এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে “করোনা সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রশাসনের সঙ্গে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা” শীর্ষক শিরোনামে ২০২০ সালের ২৮ মার্চে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটির ৩৬ সেকেন্ড পরবর্তী সময়ের দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের তুলনা করলে হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। সংবাদ প্রতিবেদনটিতে দৃশ্যটি সম্পর্কে বলা হয় এটি নোয়াখালীতে ধারণকৃত এবং করোনার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে কাজ করছে সেনাবাহিনী। তবে, উক্ত সেনা সদস্য হ্যান্ডমাইকে কী বলছিলেন তা শোনা যায়নি। তবে উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে ভালোবাসা দিবসের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি এবং সংবাদ প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময়কালও ভালোবাসা দিবস পেরিয়ে যাওয়ার প্রায় দেড় মাস পর। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে উক্ত সেনা সদস্য ভালোবাসা দিবস নয় বরং করোনার বিষয়ে জনসচেতনতামূলক কোনো কথা বলছিলেন।

সুতরাং, প্রায় পাঁচ বছর আগে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত জনসচেতনতা তৈরিতে সেনা সদস্যের মাইকিংয়ের ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন অডিও সংযুক্ত করে ১৪ ফেব্রুয়ারি নিয়ে সেনাবাহিনীর মাইকিং দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img