বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে রাজধানীতে আজ ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এর প্রেক্ষিতে একটি ভিডিও গত রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, “বুয়েটে শিক্ষার্থীদের হলে ঢুকে সেনাবাহিনীর ব্যপক মারধর। আগামীকালের সারা দেশব্যাপী লংমার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি প্রত্যাহার করার জন্য।”

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, গত ১৮ মে জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্দোলনরত চাকরিচ্যুত সেনাসদস্যদের সাথে সেনা প্রতিনিধি দলের আলোচনা শেষে সেনা সদস্যরা সেগুনবাগিচা সড়ক দিয়ে চলে যান। এ সময় আন্দোলনকারীরা তাদের পিছু নিলে সেনা সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন। এটি সে সময়েরই ভিডিও।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেসবুকে গত ১৮ মে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, “বরখাস্তকৃত সেনাসদস্যরা চাকরিতে পুনর্বহালের দাবীতে প্রেসক্লাবে এসে দাবী দাওয়া সহ হাজির হয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার প্রাক্কালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী লাঠিচার্জ সহ গণপিটুনি দেয়।”

ভিডিওটি প্রেসক্লাব এলাকারই কিনা তা নিশ্চিত হতে জিওলোকেশন যাচাই করে দেখা যায়, এটি প্রেস ক্লাব এলাকায় সেগুনবাগিচা সড়কের ছবি।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ১৮ মে এর সংবাদ থেকে জানা যায়, চার দফা দাবি নিয়ে সকাল থেকেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। বৈঠক শেষে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দল কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না দিয়েই সরাসরি গাড়িতে উঠে প্রেসক্লাব এলাকা ত্যাগ করেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা জাতীয় প্রেসক্লাবের বাইরের গেটের সামনে অবস্থান নেন। পরে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়ে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। তবে এখানে কাউকে লাঠিচার্জ করা হয়নি। সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরে সেগুনবাগিচা সড়ক দিয়ে চলে যান। এ সময় আন্দোলনকারীরা তাদের পিছু নিলে সেনা সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।
সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজের এক পোস্ট থেকেও ছত্রভঙ্গের ঘটনার বিষয়টি জানা যায়।
সে সময় বিএনএনিউজ২৪ নামে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ভিডিওতেও একই স্থানের ফুটেজ পাওয়া যায়।
অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয়, গত মে মাসের ভিন্ন ঘটনার।
সুতরাং, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) হলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনীর মারধরের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Sagar Chowdhury: Facebook Video
- Bangla Tribune: দিনভর আলোচনা-উত্তেজনার পর আন্দোলন স্থগিত করলেন চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা