সম্প্রতি, বাংলাদেশের নওগাঁ জেলায় আব্দুল হাকিম নামের এক মুসলিম যুবক অঞ্জনা রায় নামের এক হিন্দু তরুণীকে অপহরণ করেছে। অঞ্জনার বাবা, হারাধন রায়, এই অপহরণের প্রতিবাদ জানালে তাকে মুসলিমরা মারধর করে – এই দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, একজন লোককে কয়েকজন ব্যক্তি মারধর করছে।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নওগাঁয় এমন কোনো অপহরণ কিংবা মারধরের ঘটনা ঘটেনি প্রকৃতপক্ষে, সিলেটের হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং করগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু দাশ ওরফে রানাকে হেনস্থার দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেওয়া মুরাদ আহমেদ নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৩ মে তারিখে ‘নবীগঞ্জের করগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু দাশ রানাকে সিলেটে উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশে সোর্পদ।’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪.কম এর ওয়েবসাইটে ‘সিলেটে ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর করে পুলিশে দিল জনতা’ শীর্ষক শিরোনামে গত ১৪ মে তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে মারধরের শিকার হওয়া ব্যক্তির ছবিও সংযুক্ত করা হয় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে মারধরের শিকার হওয়া ব্যক্তির এবং ভিডিওর নির্দিষ্ট ফ্রেমের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘সিলেট নগরে আওয়ামী লীগ নেতা এক ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর করে পুলিশের দিয়েছে জনতা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মঙ্গলবার [১৩ মে] রাত ৯টার দিকে নগরের রিকাবীবাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয় বলে জানান সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। আটক নির্মলেন্দু দাশ রানা হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। এ ছাড়া তিনি নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।’
এ ঘটনার বিষয়ে প্রথম আলো এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও হামলার শিকার ব্যক্তি সম্পর্কে একইরকম তথ্য জানা যায়।
সুতরাং, সিলেট হবিগঞ্জের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে হেনস্থার দৃশ্যকে নওগাঁয় এক হিন্দু তরুণীকে মুসলিম যুবক কর্তৃক অপহরণের প্রতিবাদ করায় মেয়ের বাবাকে মুসলিমদের মারধরের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Murad Ahmed: Facebook Post
- bdnews24.com: সিলেটে ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর করে পুলিশে দিল জনতা
- Prothom Alo: সিলেটে আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ