সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে পার্বত্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর আদলে একদল সশস্ত্র ব্যক্তির বক্তব্যের একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে তাদেরকে বলতে শোনা যায়, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যতই চেষ্টা করুক, এই পার্বত্য অঞ্চল থেকে আমাদের কোনোদিন বিতাড়িত করতে পারবে না। কারণ এই পাহাড় আমাদের। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্য করে বলছি, তারা যদি এত শক্তিশালী হয়ে থাকে তাহলে তারা আমাদের সাথে মোকাবেলা করুক। আমরাও প্রস্তুত আছি। খেলা হবে।’
অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি পার্বত্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সেনাবাহিনীকে হুমকির দৃশ্যের।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওটি ২ লক্ষ ৫০ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ৩ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি পার্বত্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সেনাবাহিনীকে হুমকির দৃশ্যের নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কোন গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে ভিডিওটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে প্রদর্শিত মানুষ, মানুষের অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়।

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে এআই ও ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম ‘ডিপফেক ও মিটার’ এ আলোচিত ভিডিওটি বিশ্লেষণ করলে এটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। প্ল্যাটফর্মটির ‘AVSRDD’, ‘LIPINC’ ও ‘XCLIP’ ডিটেক্টরের বিশ্লেষণমতে ভিডিওটি ভুয়া বা এআই তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা যথাক্রমে ৯৯.৫ শতাংশ, ৯৯.৮ শতাংশ ও ৯৯.৮ শতাংশ। এছাড়াও, এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী আরেক প্ল্যাটফর্ম ‘হাইভ মডারেশন’ এর বিশ্লেষণমতে আলোচিত ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা ৯২.৮ শতাংশ।
এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে পার্বত্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সেনাবাহিনীকে হুমকির দৃশ্য দাবি করে অনলাইনে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Hive Moderation
- DeepFake-O-Meter
- Rumor Scanners’ analysis