আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ২৫ সেনা কর্মকর্তার (সাবেক-বর্তমান) বিষয়ে গত ১১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস এ-তে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। এই সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের জন্য মো. হাকিমুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
১১ অক্টোবর ‘POYGAM NEWS’ নামের টিকটিক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত এই ভিডিওটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি প্রায় ৪ লক্ষবার দেখা হয়েছে।

ভিডিওতে সেনা কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, “ পুলিশকে বলা হচ্ছে তার যদি গ্রেফতার করতে পারেন তাহলে করে ফেলেন। বাট আমরা যদি মনে করেন কেউ নরমাল এলপিআরে গেছে..মানে নরমাল চাকরির রিটার্ডমেন্টে চলে গেছে..লেফটেন্যান্ট কর্নেল এক্স.. তার এলপিআরেরও মেয়াদ শেষ, তাকে আমরা অপশন দিবো, হি ক্যান কাম.. তার জন্য অপশন থাকবে.. যেহেতু আমার সেনা আইন তার উপর থাকে না.. তার কাছে অপশন থাকবে সে আমাদের হেফাজতেও আসতে পারবে অথবা আমরা এটা ক্লিয়ার হয়ে নেন যখনই অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়, এটা যে শুধু পুলিশ করবে তা না, ইনডিভিজুয়াল যদি মনে করে কোর্টে গিয়ে হাজির হয়ে গেলাম, মহামান্য আদালত আমার নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে, প্লিজ চার্জ মি, হি ক্যান ডু ইট… তার হাতে অপশন সে পুলিশের কাছে যেতে পারে, কোর্টে যেতে পারে, আমরা বলেছি তুমি যদি আমাদের হেফাজতে থাকতে চাও ইউ ক্যান অলসো গিভ ইউ সিকিউরিটি অফ ইওর স্টেট”।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান গ্রেফতার হননি। প্রকৃতপক্ষে, কোনোপ্রকার তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে তাতে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও আলোচিত দাবিটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। সরকারের পক্ষ থেকেও উক্ত সেনাকর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে কোনো দাবি করা হয়নি।
এছাড়া, মো. হাকিমুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কোনো খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত হতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরে (আইএসপিআর) যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। আইএসপিআরের পক্ষ থেকে রিউমর স্ক্যানারকে জানানো হয়েছে, এটি একটি মনগড়া গুজব।
সুতরাং, সেনা কর্মকর্তা মো. হাকিমুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Statement from ISPR
- Somoy TV: চার্জশিটে নাম আসা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জন হেফাজতে
- Prothom Alo: হেফাজতে ১৫ সেনা কর্মকর্তা, আত্মগোপনে একজন