গত ১৩ জুন (শুক্রবার) ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলা এখনো চলমান রয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের অবস্থা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় ১৬ লক্ষ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওতে প্রায় ৫৩ হাজার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি প্রায় ৩ হাজার পাঁচশতবার শেয়ার করা হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভিডিও নয়; বরং, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে 3amelyon নামের ইউজার আইডির একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৪ জুন তারিখে “عامليون #جنوب_لبنان” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে এটির হুবহু মিল রয়েছে।

তাছাড়া, ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করে এটি এআই দ্বারা তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়।
পরবর্তীতে, 3amelyon নামের ইউজার আইডির ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে তাতে এমন ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় নির্মিত একাধিক কন্টেন্ট দেখতে পাওয়া যায়। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে নির্মিত এমন কিছু ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
পাশাপাশি, অ্যাকাউন্টটির বায়ো সেকশন ইংরেজিতে ভাষান্তরের মাধ্যমে দেখা যায়, সেখানে ‘Resistance to Artificial Intelligence’ শীর্ষক লেখা রয়েছে। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, উক্ত ভিডিওগুলো এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী একাধিক টুল দিয়ে যাচাই করলে তা এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৩ শতাংশ পর্যন্ত বলে জানা যায়।

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের অবস্থা দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র