গত ৬ মে পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ভারত দাবি করে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক অভিযানে তারা জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তইয়েবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবি সম্বলিত ছবি ব্যবহার করে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি আসল নয় বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা একটি ছবি।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে, ‘USMC’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের গত বছরের ১৮ অক্টোবর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে একই ছবিটি থাম্বনেইল হিসেবে ব্যবহার হতে দেখা যায়। একইভাবে, ‘Milsim AK47’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের গত ৮ এপ্রিল এবং ‘MRL TROOPS’ নামের একটি চ্যানেলের গত ১৯ মার্চ প্রকাশিত ভিডিওতেও ছবিটি থাম্বনেইলে ব্যবহার করা হয়।

ভিডিও তিনটির শিরোনামেই দুইটি দেশের মধ্যে বিমানযুদ্ধের দাবি করা হলেও ইউটিউব চ্যানেলগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, এর মধ্যে দুইটি চ্যানেলের ‘অ্যাবাউট’ সেকশনে উল্লেখ আছে যে, চ্যানেলগুলো থেকে ওয়ার-সিমুলেশন গেমের ভিডিও প্রকাশ করা হয়। অন্য একটি চ্যানেলের ভিডিওর বর্ণনায় ‘প্লেয়িং আরমা থ্রি’ উল্লেখ রয়েছে, যা একটি ওয়ার-সিমুলেশন ভিডিও গেম। অর্থাৎ, অধিক ভিউ পাবার আশায় ভিডিওগুলোতে ক্লিকবেইট শিরোনাম ব্যবহার করা হয়েছে।
আলোচিত ছবিটি থাম্বনেইল হিসেবে ব্যবহার করা ‘USMC’ নামের প্রথম চ্যানেলটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এর প্রায় সব ভিডিওর থাম্বনেইলে একই ধরনের ছবি ব্যবহৃত হয়। এই ছবিগুলো শুধুমাত্র এই চ্যানেলেই পাওয়া যায় এবং কোনো গণমাধ্যম বা অন্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে এদের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। এছাড়া, ছবিগুলোতে এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার বিভিন্ন লক্ষণও পরিলক্ষিত হয়।
উল্লেখ্য একই ছবিকে সম্প্রতি বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ভারতের যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করার দাবিতেও প্রচার করা হয়েছিল। এ নিয়ে রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক দেখুন এখানে।
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ছবিকে সাম্প্রতিক পাক-ভারত সংঘাতের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s own analysis