সমন্বয়কদের নিয়ে আবু সাঈদের বাবার নামে ভুয়া মন্তব্য প্রচার 

গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে পুলিশ গুলিতে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নিহত আবু সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

সম্প্রতি, “সমন্বয়ক নামে শিবিরের কাছে প্রশ্ন, ” মৃত্যুর আগে ৫ ঘন্টা আমার ছেলেকে কোথায় রাখা হয়েছিলো?” শীর্ষক মন্তব্যটি নিহত আবু সাঈদের বাবার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “সমন্বয়ক নামে শিবিরের কাছে প্রশ্ন, “মৃত্যুর আগে ৫ ঘন্টা আমার ছেলেকে কোথায় রাখা হয়েছিলো?” শীর্ষক মন্তব্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বাবা করেননি বরং, কোনোপ্রকার তথ্যসূত্র ছাড়াই আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম নিহত ব্যক্তি আবু সাঈদে। স্বাভাবিকভাবে তার বাবা এমন কোনো মন্তব্য করলে তা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করার কথা। কিন্তু অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যমে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে, গত ০৬ আগস্ট আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের ডেইলি স্টারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত সাক্ষাৎকারে ছেলে হত্যার বিচার চান তিনি। কিন্তু আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো মন্তব্য তিনি করেননি।

পরবর্তীতে আলোচিত মন্তব্যটির সূত্রপাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ফেসবুক মনিটরিং টুল ব্যবহার করে ‘Azizur Rahman Azad’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রচারিত সম্ভাব্য প্রথম দিকের একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত পোস্টে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। 

এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর “সুস্থভাবে হেঁটে যাওয়া একটি মানুষকে পাঁচ ঘন্টা পরে কেন মৃত অবস্থায় হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো ? এই পাঁচ ঘন্টা সে কোথায় ছিলো? কি অবস্থায় ছিলো?” শীর্ষক একটি তথ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে সুস্থভাবে হেঁটে যাওয়া আবু সাঈদকে ৫ ঘন্টা পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দাবি করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এ দাবিটি ভুয়া হিসেবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। যা নিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, “সমন্বয়ক নামে শিবিরের কাছে প্রশ্ন, মৃত্যুর আগে ৫ ঘন্টা আমার ছেলেকে কোথায় রাখা হয়েছিলো?” শীর্ষক মন্তব্যটি ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের বাবা করেছেন মর্মে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img