জামায়াতে ইসলামীর সাথে পুলিশের সংঘর্ষের এই ভিডিওটি পুরোনো

জামায়াতে ইসলামী ও পুলিশের সংঘর্ষ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও গত ১৩ ডিসেম্বরের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

পুলিশের সংঘর্ষে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও পুলিশের সংঘর্ষের ভিডিওটি গত ১৩ ডিসেম্বরের নয় বরং ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গণমিছিলে পুলিশের সাথে জামায়াত নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Mahbub Parvez Shagir নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বরে “জামায়াতে ইসলামী সাথে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে উক্ত আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর “পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের বিশাল গনমিছিল |” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও পাওয়া যায়।

ভিডিও থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জননেতা জনাব মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এর নেতৃত্বে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া, দেশিয় বেসরকারি টিভি চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব চ্যনেলে ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর “মালিবাগে জামায়াত-পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবদন থেকে জানা যায়, বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচিকে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও গণমছিলের আয়োজন করে। অনুমতি ছাড়া গণমিছিল করায় পুলিশ বাধা দিলে জামায়াতের নেতাকর্মীদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

১৩ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে কিনা তার অনুসন্ধানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। উক্ত ওয়েবসাইটে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি এটিএম মাছুম এর একটি বিবৃতি খুঁজে পাওয়া যায়।

বিবৃতি থেকে জানা যায়, গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানববন্ধনের আয়োজন করলে পুলিশ সেই কর্মসূচীতে হামলা করে। হামলার পাশাপাশি অউলিশের বিরুদ্ধে জামায়াতের কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করারও অভিযোগ করেন তিনি।

এছাড়া অনুসন্ধনে গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক আয়োজিত মানববন্ধনের পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ভিডিওর (,) সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়নি।

মূলত, ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর বিএনপির গণমিছিল কর্মসূচির সাথে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গণমিছিলের আয়োজন করে। তবে অনুমতি ছাড়া গণমিছিল করা অভিযোগে পুলিশ জামায়াতে ইসলামীর গণমিছিলে বাধা দেয়। পরবর্তীতে তা পুলিশ ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রূপ নেয়। যা সে সময় বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং দেশিয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেই ঘটনার একটি ভিডিওকে গত ১৩ ডিসেম্বরের পুলিশ-জামায়াত সংঘর্ষের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, জামায়াতে ইসলামী ও পুলিশের সংঘর্ষের সাম্প্রতিক ভিডিও দাবিতে গত বছরের জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষের একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img