সম্প্রতি, “আ : লীগের সকল নেতাকর্মীকে জামিন দিতে হবে” শিরোনামে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে এবং এখানে।
একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আওয়ামী লীগের কর্মীদের জামিন দেয়ার আদেশ দিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি। প্রকৃতপক্ষে, কোনোরূপ তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ভিন্ন ঘটনার কিছু ভিডিও যুক্ত করে আলোচিত দাবি সম্বলিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিও যাচাই ১
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত একটি ভিডিও’র দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একটি দৃশ্যের মিল রয়েছে।

১৬ মিনিট ১৬ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে জানা যায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে ২০০৯ সালে পিলখানায় সংঘটিত নির্মম হত্যাকান্ডে শাহাদাতবরণকারী সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশবাসীকে সতর্কবার্তা দেন সেনাপ্রধান।
ভিডিও যাচাই ২
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও’র সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে।

৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড সময়ের দীর্ঘ এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে জানা যায়, এটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ভিডিও এবং ঐ সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
ভিডিও যাচাই ৩
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৬ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও’র সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একটি দৃশ্যের মিল রয়েছে।

২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে জানা যায়, চলতি বছরের আগস্ট মাসে জন্মাষ্টমী শোভাযাত্রার অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রেখে সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকারে বাস করবে বলে মন্তব্য করেন।
উপরিউক্ত তিনটি ভিডিওর কোনোটিতেই সেনাপ্রধান আওয়ামী লীগের কর্মীদের জামিন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন বলে প্রমাণিত হয়নি।
এছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে আরো অপ্রাসঙ্গিক কিছু ফুটেজ ও ছবি যুক্ত করা হয়েছে, যেগুলোতে আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ নেই।
স্বাভাবিকভাবে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিষয়ে এমন মন্তব্য করলে তা নিয়ে মূলধারার সংবাদমাধ্যমে ঢালাওভাবে খবর প্রচার হতো। তবে এক্ষেত্রে, দেশিয় সংবাদমাধ্যম কিংবাদ বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও আলোচিত দাবির বিষয়ে কোনো প্রমাণ মেলেনি।
সুতরাং, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান “আ : লীগের সকল নেতাকর্মীকে জামিন দিতে হবে” বলে আদেশ দিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।





