প্রধান উপদেষ্টা আ.লীগের অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচন পিছিয়েছেন দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন এপ্রিলে পিছিয়ে দিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ৪ লক্ষ ৮২ হাজারবার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে এপ্রিলে নেওয়ার ঘোষণা দেননি। প্রকৃতপক্ষে, গত জুনে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস এপ্রিলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দিলেও পরবর্তীতে তিনি আগের দাবি থেকে সরে এসে ফেব্রুয়ারিতে এগিয়ে আনার ঘোষণা দেন।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওতে থাকা লোগোর সূত্র ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘Anandabazar Patrika’ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ জুন ‘বাংলাদেশে ২০২৬ এপ্রিলে নির্বাচন, লড়বে আওয়ামী লীগ? শেখ হাসিনা দেশে ফিরবেন?’ প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর শুরু থেকে ৩৮ সেকেন্ড অংশের হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ৭ জুন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে  প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘ বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসংক্রান্ত চলমান সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে আমি আজ দেশবাসীর কাছে ঘোষণা করছি যে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে আপনাদের কাছে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রদান করবে।’

এর পরবর্তীতে, গত ৫ ই আগস্ট ড. ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে নির্বাচন এগিয়ে ফেব্রুয়ারিতে আনেন। সর্বশেষ গত ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত মে মাসে আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এবং দলটির সঙ্গে সম্পৃক্ত সব সংগঠনের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

অর্থাৎ, সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের তারিখ এপ্রিলে পিছিয়ে দেননি। 

সুতরাং, গত জুনে ড. ইউনূসের এপ্রিলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে জন্য নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img