সম্প্রতি ‘বাংলাদেশে প্রবেশ করলো আরাকান আর্মি, বান্দারবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের ভাজাবুনিয়া গ্রাম সহ বেশকিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা, রাত হলেই এসব অঞ্চলে শুরু হয় বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞ।…’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷
ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আরাকান আর্মি কর্তৃক বান্দারবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের বেশকিছু অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া এবং সেখানে লুটপাত চালানোর মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালে মায়ানমারের কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দেশটির নিয়াংপিন্থা পুলিশ স্টেশন দখল করার ভিডিওকে বান্দরবানে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী Royal Peacock Column এর ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে।

উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির ০১:৩০ থেকে ০২:১২ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে।
উল্লেখিত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর ভোরে রয়েল ডাউ কর্পস, ইয়োমা কর্পস (১), আলাওয়াকা কর্পস, বিপিএলএ এবং কেএনএলএ নামক মায়ানমারের কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিলে দেশটির ফিউ টাউনশিপের পুরাতন ইয়াঙ্গুন-মান্ডালে রোডের কাছে নিয়াংপিন্থা পুলিশ স্টেশনে আক্রমণ চালায়। এরপর তারা স্টেশনটিতে প্রবেশ করে সেটি সম্পূর্ণরূপে দখল করতে সক্ষম হয়। সংযুক্ত ভিডিওটি উক্ত ঘটনার দৃশ্য।
পরবর্তীতে, থাইল্যান্ড ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম Red News Agency এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি।
সুতরাং, মায়ানমারের কতিপয় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একটি পুলিশ স্টেশন দখলে নেওয়ার ভিডিওকে বান্দরবানে আরাকান আর্মির অনুপ্রবেশ ও নিয়ন্ত্রণের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Royal Peacock Column-P 29913 – Facebook Post
- Red News Agency – YouTube Video