গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধের মধ্যে উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে, খাগড়াছড়ির ভয়াবহ অবস্থা দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে একদল সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দেখা যাচ্ছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় ২ লাখ ছিয়াত্তর হাজার বার দেখা হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, একদল সশস্ত্র গোষ্ঠীর এই ভিডিওটি খাগড়াছড়ির সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, অন্তত গত জুলাই থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদ্যমান একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘PŨ DŶ’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৮ জুলাই প্রচারিত একটি রিল ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি ফুমদের থাইল্যান্ডে যাওয়ার ভিডিও। (অনূদিত)
উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিতে ঠিকানা হিসেবে কম্বোডিয়ার নাম উল্লেখ রয়েছে, তবে ‘ট্রান্সপারেন্সি’ বিভাগে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেই। অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট এবং কমেন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় উক্ত ব্যক্তি খমের (কম্বোডিয়ান ভাষা) ভাষা ব্যবহার করেন।

পরবর্তীতে, গত ২৭ জুলাই ‘สันติ เทพมณี’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও আলোচিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, ‘মনে রেখো, ওই খ্মেররা (কম্বোডিয়ার অধিবাসী) যদি না থামো, আমরা গুলি করে তাদের দেশই দখল করে নেব।’ (অনূদিত) উক্ত অ্যাকাউন্টটি থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত।

তবে, ভিডিওটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিশ্চিত হওয়া না হওয়া গেলেও এটি নিশ্চিত যে ভিডিওটি খাগড়াছড়ির সাম্প্রতিক কোনো ভিডিও নয়। উল্লেখিত পোস্ট দুটির ২৭ ও ২৮ জুলাই প্রচার হলেও খাগড়াছড়ির দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ৩০ সেপ্টেম্বর প্রচার করা হয়। খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতার সূত্রপাত গত ২৪ সেপ্টেম্বর এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে।
অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক খাগড়াছড়ির সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয়।
সুতরাং, অন্তত গত জুলাই মাস থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদ্যমান একটি ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ির দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
তথ্যসূত্র
- PŨ DŶ – Facebook Post
- สันติ เทพมณี – Facebook Post