কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে বিএনপি কর্তৃক মারধরের দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার  

সম্প্রতি, “কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে বেধড়ক মারধর করলো মবের সম্রাট বিএনপির লোকজন। বাড়ি থেকে ধরে এনে তাকে মা-বাবার সামনে মারধর করছে ইউনুছ বাহিনী” দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে বিএনপি কর্তৃক মারধরের ঘটনার নয় বরং, চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জে ভাতিজাকে খুনের দায়ে ক্ষুব্ধ জনতার হাতে চাচাকে গণধোলাইয়ের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের ‘jibon_j2’ নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১২ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি ফরিদগঞ্জে ভাতিজা হত্যাকারী চাচাকে পুলিশের হাত থেকে নিয়ে সাধারণ মানুষের গণধোলাইয় দেওয়ার ভিডিও।

এ বিষয়ে আরো অনুসন্ধান করে দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে গত ১২ আগস্ট প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১১ আগস্ট চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বিদেশ পাঠানোর টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধের জেরে চাচার হাতে ভাতিজা খুন হয়েছেন। নিহতের নাম বাহার হোসেন বাবু। আর ঘাতক চাচার নাম হাসান। হামলায় বাবুর বাবা রওশন আলী ও ভাই আরমান হোসেন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরমানের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা ঘাতকের বাড়ি ঘিরে রাখে। স্থানীয়দের সহায়তায় ঘাতক হাসান ও সহযোগী সাকিলকে আটক করেছে পুলিশ।

চাঁদপুরের স্থানীয় গণমাধ্যম দৈনিক চাঁদপুর খবরের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাবু মারা যাওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ঘাতক হাসানকে আটক করে অবরুদ্ধ রাখে এবং তাৎক্ষণিক পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় প্রেরণ করেন। এরপর শাকিলকে মুন্দির হাট এলাকা থেকে আটক করে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসলে ক্ষুব্ধ জনতা গণধোলাই দেয়। পুলিশ শাকিলকে গণধোলাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করে পাশের একটি পাকা ভবনে আটক রাখে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম অবস্থায় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে শাকিল ও তার স্ত্রী সুমাইয়াকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 

সেসময় এ বিষয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমও সংবাদ (,,)  প্রচার করে।

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: শাহ আলম জানান উক্ত ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে তিনি অবগত নন। পরবর্তীতে, এখন টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি তালহা যুবায়েরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি মূলত আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত, এ বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, ভিডিওটি কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধরের নয়। 

সুতরাং, চাঁদপুরে ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ কর্মীকে বিএনপি কর্তৃক মারধরের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img