সম্প্রতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে কন্যা সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল তার মাকে পাশে রেখে তার মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেছেন জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবির ফেসবুক ভিডিও দেখুন এখানে।
এ সংক্রান্ত ভিডিওগুলো ফেসবুকেই দেখা হয়েছে অন্তত এক লক্ষাধিক বার।
একই ভিডিও টিকটকে দেখুন এখানে। এই ভিডিওটিও দেখা হয়েছে অন্তত চার লক্ষাধিক বার।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনার জন্মদিনে পুতুল মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয় বরং ডিপফেক প্রযুক্তির ব্যবহারে ভুয়া ভিডিওটি প্রচার করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম সূত্রে সায়মা ওয়াজেদ শেখ হাসিনার জন্মদিনে মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেছেন দাবিতে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শীর্ষক কোনো ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এমনকি আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রেও এই ভিডিওর বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি। পুতুলের লিংকডইন এবং এক্স অ্যাকাউন্টেও এমন ভিডিওর অস্তিত্ব মেলেনি।
পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভিডিওটির উপাদানগুলোতে অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।
পুতুলের কথা বলার সময় তার এবং পাশে থাকা শেখ হাসিনার মুখের মুভমেন্টসহ পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলোয় অসামঞ্জস্যতা দেখা যায়।
তাছাড়া, রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেশীয় গণমাধ্যমেের ২০২১ সালের প্রতিবেদনে ব্যবহৃত পুতুল ও শেখ হাসিনার ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

ছবিটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটিতে এবং প্রাপ্ত ছবিতে পুতুল ও শেখ হাসিনাকে একই পোশাকে, একই স্থানে এবং একই ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
অর্থাৎ, অন্তত ২০২১ সাল থেকে অনলাইনে থাকা একটি ছবি ব্যবহার করে ডিপফেক প্রযুক্তিতে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’ এর ‘AVSRDD (2025)’ মডেলের মাধ্যমে ভিডিওটি পরীক্ষা করে রিউমর স্ক্যানার। মডেলটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ।
সুতরাং, শেখ হাসিনার জন্মদিনে মেয়ে পুতুল মায়ের জন্য দোয়া করতে বলেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভুয়া।
তথ্যসূত্র
- Rumor Scanner’s own analysis