খাগড়াছড়ি দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার আন্দোলনে সংঘর্ষের ভিডিও প্রচার 

গতকাল ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে অবরোধের মধ্যে উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে, খাগড়াছড়ি মহাজনপাড়ার রাতের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে রাস্তায় থাকা জনগণের দিকে গাড়ি থেকে টিয়্যার গ্যাস ও আগুনের শিখা ছুঁড়ে মারতে দেখা যায়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি খাগড়াছড়ির মহাজনপাড়ায় সংঘর্ষের নয় বরং, এটি ইন্দোনেশিয়ায় চলমান আন্দোলনের দৃশ্য।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের ‘martapurapedia’ নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ৩০ আগস্ট প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির শুরু থেকে ১২ সেকেন্ড অংশের হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়, এটি গত ২৯ আগস্ট ইন্দোনেশিয়ার বিক্ষোভের ভিডিও।

ভিডিওটি নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে, এতে ‘BRIMOB’ লেখা গাড়ি থেকে আগুনের শিখা ছুঁড়ে মারতে দেখা যায়। অনুসন্ধানে জানা যায় ইন্দোনেশিয়ার Brimob (পূর্ণরূপ: Korps Brigade Mobil, অর্থাৎ Mobile Brigade Corps) হলো ইন্দোনেশিয়া ন্যাশনাল পুলিশের একটি বিশেষায়িত আধাসামরিক ইউনিট। এটি বিক্ষোভ, দাঙ্গা বা সহিংস প্রতিবাদ দমনে কাজ করে। 

Screenshot: Claim Video 

পরবর্তীতে, ভিডিওটির আশেপাশের ভবন, গেট ও অবকাঠামোর সূত্র ধরে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে নিশ্চিত হওয়া যায়, ঘটনাস্থলটি ইন্দোনেশিয়ার সেন্ট্রাল জাভা প্রদেশের সুরাকার্তা এলাকা।  

Comparison: Rumor Scanner

গত ৩ সেপ্টেম্বর সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইন্দোনেশিয়ায় সংসদ সদস্যদের জন্য ন্যূনতম মজুরির দশগুণ আবাসন ভাতা অনুমোদন করা হয়। একই সঙ্গে সামাজিক খাতে ব্যয় কমানোর সিদ্ধান্তও নেয় সরকার। এ সিদ্ধান্তকে ঘিরে গত আগস্টে শুরু হওয়া বিক্ষোভে পুলিশের গাড়িচাপায় রাইডশেয়ার চালক আফফান কুরনিয়াওয়ানের মৃত্যুর পর সহিংসতায় রূপ নেয়। এসময় দেশজুড়ে সরকারি ভবন ও সংসদ সদস্যদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।

অর্থাৎ, ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। 

সুতরাং, ইন্দোনেশিয়ার আন্দোলনের ভিডিওকে খাগড়াছড়ির দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img